ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মঙ্গলবার তারা হাজিরা দেন বলে জানান তাদের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, মামলাটিতে আদালত আগামী ৭ অগাস্ট পরবর্তী হাজিরার দিন ঠিক করেছেন। এর মধ্যে মামলা প্রত্যাহার না হলে ওইদিন তাদের আবার আদালতে হাজির হতে হবে।
হাজিরা দেওয়া শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সিএমএম আদালতের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসাইন বলেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ঝুলিয়ে দিয়ে এ ধরনের হয়রানি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
“কিছু অসৎ ব্যক্তির পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কাজগুলো করছেন। তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না যে, তিনি কী করছেন। আমরা আশা করব- অতি দ্রুত তিনি এ মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করবেন।”
গত ২৬ মে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাস চাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নাজমুল হাসান রানা এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ছাত্র আরাফাত হোসেন নিহত হন।
প্রতিবাদে ২৬ ও ২৭ মে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে ২৭ মে বিকালে পুলিশের লাঠিপেটায় আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হয়। পুলিশের হামলায় সাংবাদিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়।
পরে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর করে।
ওইদিনই রাতে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সব শিক্ষার্থীকে পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
ওই রাতেই আশুলিয়া থানার পুলিশ উপাচার্যের বাসভবন এলাকার ভেতর থেকে ১০ ছাত্রীসহ আন্দোলনকারী ৪২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন বিকালে ওই শিক্ষার্থীরা জামিনে মুক্তি পান।
এ ঘটনার সাতদিন পর গত ৩ জুন জরুরি আরেক সিন্ডিকেট সভায় ৮ জুন থেকে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সিন্ডিকেট সভায় বলা হয়, এ মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা মাহতাব উজ জাহিদ মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমার জানা নেই।”