সুইডেনের স্টকহোমে সাম্প্রতিক সফরে প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে এই জবাব আসে।
এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইউনূস সেন্টার বলেছে, “এই অসত্য অভিযোগগুলো এর আগেও তোলা হয়েছে এবং এগুলোর জবাবও প্রতিবারই দেওয়া হয়েছে। আমরা আবারো এগুলোর জবাব দিচ্ছি।”
নোবেলজয়ী বাংলাদেশি ইউনূসকে বয়সসীমা অতিক্রান্তের কারণ দেখিয়ে ছয় বছর আগে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই পদক্ষেপ চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গিয়ে হেরেছিলেন তিনি।
আদালতের রায়ের পর ওই পদ ছেড়ে দিলেও তারপর তিনি সরকারের প্রতি ক্ষোভ থেকে নানা পদক্ষেপ নেন বলে শেখ হাসিনার বক্তব্যে নানা সময়ে উঠে আসে।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে ‘থ্রেট’ করিয়েছিলেন বলেও শেখ হাসিনার কথায় আসে। ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে দেওয়া ইউনূসের অনুদানের খবর যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে আসে।
শেখ হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এসব অভিযোগ তোলার পর বহির্দেশের বিষয়ে হিলারি তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদের প্রভাব খাটিয়েছিলে কি না, তা খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সিনেট কমিটি।
এই বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে সিনেটর চাক গ্র্যাসলির চিঠি দেওয়াকে তদন্ত বলা যায় না।
তবে এনিয়ে তদন্ত হলে তাকে স্বাগত জানানো হবে জানিয়ে ইউনূস সেন্টার বলেছে, “এ ধরনের কোনো তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। বর্তমানে প্রফেসর ইউনূসকে মিথ্যা প্রচারণার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হলে মিথ্যার কোনো জায়গা থাকবে না।”
ইউনূস কখনও ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভকে কোনো চাঁদা দেননি দাবি করে বলা হয়েছে, তিনি ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভের অনুষ্ঠানে শুধু বক্তা হিসেবে যোগদান করেছেন এবং এজন্য কোনো ফি নেননি।
হিলারিকে দিয়ে ফোনের অভিযোগ নাকচ করে ইউনূস সেন্টার বলেছে, “হিলারি ক্লিনটন প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে থাকলে তা তিনি নিজে থেকেই করেছেন…. স্ব-উদ্যোগেই করেছেন।”
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর পরিচালনা পর্ষদের অনুরোধেই কেবল তিনি পদটিতে থাকছিলেন বলে ইউনূস সেন্টারের দাবি।
“তিনি যতবারই এই পদ ছেড়ে দিতে চাইছিলেন, প্রতিবারই পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা তাকে চলে না যেতে অনুরোধ করছিলেন।”
কর ফাঁকির অভিযোগ নিয়ে ইউনূস সেন্টার বলেছে, “প্রফেসর ইউনূসের নিকট কর বিভাগের কোনো কর দাবি নেই বা তার কোনো বকেয়া করও নেই। তার আয় ও কর সংক্রান্ত সব তথ্য কর কর্তৃপক্ষের নিকট রয়েছে।
“প্রফেসর ইউনূস আয়কর আইনের এই নতুন ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছেন। বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন।”
গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থ সরানোর কোনো ঘটনা ঘটলে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক নীরিক্ষায় ধরা পড়ত, বলেছে ইউনূস সেন্টার।
বিশ্বে ইউনূসের মালিকানাধীন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই দাবি করে ইউনূস সেন্টার বলেছে, “পৃথিবীর কোথাও কোনো কোম্পানিতে তার কোনো শেয়ার নেই।
“তিনি ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে তার নিজের নামে কোম্পানি তৈরি করেছেন- এই বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রমাণ প্রয়োজন। এ ধরনের কোনো প্রমাণ হাজির করার কোনো গরজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আছে বলে মনে হয় না।”