বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা

মানিকগঞ্জের এক বিচারককে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক গোলাম মুজতবা ধ্রুবর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2017, 05:15 PM
Updated : 13 June 2017, 05:44 PM

মানিকগঞ্জের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে মঙ্গলবার এই মামলাটি করেন বলে মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় এই মামলা হয়েছে। এতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাটি কালাকানুন বলে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন মহল। বাংলাদেশের এই আইনের সমালোচনা চলছে বিদেশেও।

৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা।

৫৭ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, হাই কোর্টের এমন রুলও আসে। সমালোচনার মুখে আইনের ধারাটি বাতিলের আশ্বাস দিয়ে আসছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা।

তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি রয়েছে বিভিন্ন মহলের

 

গত ১১ জুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ‘একটি অসুস্থ শিশু, বিচারকের ট্রাক ও একটি মামলা ….’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশিত হয়, যাতে বিচারক মাহবুবুর রহমানের বাড়ি বদলের ট্রাকের কারণে একটি অসুস্থ শিশুকে হাসপাতালে নেওয়ার পথ আটকে যাওয়ার কথা বলেন স্থানীয়রা।

ওই বিচারকের মানিকগঞ্জ শহরের রিজার্ভ ট্যাংকি এলাকার বাড়ি বদলানোর সময় মালামাল পরিবহনের ট্রাক ওই এলাকার এক অধ্যাপকের অসুস্থ শিশুর হাসপাতালে নেওয়ার পথ আটকে ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তখন দুই পক্ষের বাগ বিতণ্ডাও হয়। 

এই ঘটনা নিয়ে আদালতের এক কর্মচারী একটি মামলা করেন ওই শিশুটির মামা এবং স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে, যাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বিচারকের তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলার বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক মুখপাত্র বলেন, “যথাযথ ব্যাকরণ মেনেই ওই সংবাদটি প্রকাশ করা হয়; এজন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছিল।”

ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলায় ওই বিচারক তাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও করেছেন।

গোলাম মুজতবা ধ্রুব বলেন, অভিযোগ ওঠার পর ওই বিচারকের বক্তব্য শুনতে তিনি তাকে ফোন করেছিলেন। তার সঙ্গে কথাও বলা হয় এবং তার বক্তব্য অবিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয় প্রতিবেদনে।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন প্রতিবেদক গোলাম মুজতবা।