সবধরনের যানবাহনে চালু হবে ই-টিকেটিং ব্যবস্থা

জনগণের যাতায়াত সহজ ও স্বচ্ছন্দ করতে বাস, ট্রেন, নৌ-যান ও চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি বাসে ই-টিকেটিং ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনার কথা বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 01:16 PM
Updated : 1 June 2017, 01:16 PM

নতুন অর্থবছরের (২০১৭-১৮) জন্য পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫০ হাজার ৯৯ কোটি টাকা, প্রস্তাবিত মোট বাজেটের ১২ দশমিক  ৫ শতাংশ।

এই বরাদ্দ বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে ১৩ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩৬ হাজার ২৮১ কোটি টাকা।

সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত জানান, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও মানসম্মত যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় এক হাজার ১৭৯ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের মান উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

“এছাড়া বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় এক হাজার ৮৫৫ কিলোমিটার মহাসড়ক নির্মাণে প্রকল্প নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৩৭৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করা হবে। এতে ধীরগতির যানবাহনের জন্য আলাদা সার্ভিস লেন থাকবে।”

মহাসড়কে অতিরিক্ত ওজন বহনকারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থল ও নৌ-বন্দর এবং পাথর কোয়ারি ও বড় বড় টোল প্লাজায় এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীতকরণের কার্যক্রমও অচিরেই নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী জানান, পটুয়াখালীর বগা নদীতে নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু, মংলা চ্যানেলের ওপর দশম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু এবং খুলনার ঝপঝপিয়া নদীর ওপর ১১তম বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ করা হবে। এজন্য চীন সরকারের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

উদ্বোধনের দিন থেকেই পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে রেল সেবা চালু করতে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে বলে সংসদে জানান অর্থমন্ত্রী।

“পায়রা বন্দরের সাথে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা হতে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্প আমরা গ্রহণ করেছি।”

রোলিং স্টক ব্যবস্থার উন্নয়নে ১০০টি এমজি লোকোমোটিভ, ৫৫০টি এমজি এবং ১৫০টি বিজি যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে একটি রেল সেতু নির্মাণ, খুলনা-দর্শনা সেকশন ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে ডাবল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনার কথা সংসদে জানান অর্থমন্ত্রী।

নতুন অর্থবছরে নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়নেও বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মুহিত বলেন, “অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের উন্নয়নে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের আওতায় ভৈরব-সিলেট-ছাতক, বিলালপুর-ঘোড়াডিঙ্গা-নেত্রকোণা, মোহনগঞ্জ-ঘাগড়াজোড়া নৌ-পথসহ ৮টি নৌপথের নাব্যতা পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। চীনের আর্থিক সহায়তায় প্রতিটি প্রায় ৩৯,০০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার ৩টি নতুন অয়েল ট্যাংকার ও তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার সংগ্রহের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।”

আকাশপথের উন্নয়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে ও টেক্সিওয়ে, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এপ্রোন ও কানেকটিং টেক্সিওয়ে উন্নয়ন এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনা আছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন “অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, পর্যটন শিল্প এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণে আকাশ পরিবহনের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের সকল বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন, অবকাঠামোসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও জোরদারকরণে আমাদের চলমান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”