সর্বোচ্চ বরাদ্দ শিক্ষায়, বৃদ্ধির হার নগণ্য

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নতুন অর্থবছরের জন্য তার চার লাখ কোটি টাকার বাজেটে এবারও শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন, তবে জিডিপির অনুপাতে তা সামান্যই বাড়ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 11:47 AM
Updated : 1 June 2017, 12:41 PM

২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য উপস্থাপিত এই বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৬৫ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন তিনি, যা বাজেটে মোট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।

চলতি বাজেটে এই খাতে ৫২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছিলেন মুহিত, যা ছিল মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এবারের বরাদ্দ জিডিপির ২ দশমিক ৯ শতাংশ, যা গতবছর ২ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের শিক্ষা খাত জিডিপির ৬ শতাংশ বা বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ পেলে তা আদর্শ ধরা হয়।

উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন সামনে রেখে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আসন্ন নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী।

তাতে শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতের পর জনপ্রশাসনে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ, পরিবহন ও যোগাযোগখাতে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ, সুদ পরিশোধ বাবদ ১০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং প্রতিরক্ষায় ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ২২ হাজার ২২ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে ২৩ হাজার ১৪১ কোটি টাকা, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে ৫ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে ১১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগকে ৩ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা ও প্রযুক্তিখাতে বরাদ্দের তুলানামূলক চিত্র

অর্থবছর

মোট বরাদ্দ (কোটি টাকায়)

২০১৭-১৮

৬৫ হাজার ৪৪৪

২০১৬-১৭

৫২ হাজার ৯১৪

২০১৫-১৬

৩৪ হাজার ৩৭৭

২০১৪-১৫

৩২ হাজার ৭৮০

২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২৬ হাজার ৮৪৮ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ২২ হাজার ১৬২ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ হাজার ৬৯ কোটি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

এবারের বাজেট বক্তৃতায় মুহিত বলেন, সরকার এ পর্যন্ত ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করেছে। ফলে দেশের প্রায় প্রতিটি গ্রামে একটি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হয়েছে।

“মাধ্যমিক পর্যায়ে উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার স্থাপন, সরকারি বিদ্যালয় নেই এমন ৩১৫টি উপজেলার ২৯৫টি বেসরকারি বিদ্যালয়কে মডেল বিদ্যালয়ে রূপান্তর, ৩ হাজার ৫৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব এবং ২৩ হাজার ৩৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বাসা ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বাড়ানো হয়েছে। দেড় হাজার বেসরকারি কলেজ, ৩ হাজারটি বেসরকারি স্কুল ও ১ হাজার বেসরকারি মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ে প্রায় ৩৮ লাখ শিক্ষার্থীকে ৬৭৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা উপবৃত্তি ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানান মুহিত।