আপন জুয়েলার্স, রেইনট্রি হোটেলের মালিকদের তলব

‘ব্যাখ্যাহীনভাবে’ সোনা ও হীরার গয়না মজুদের অভিযোগে আপন জুয়েলার্স এবং অবৈধভাবে মদ রাখার অভিযোগে বনানীর রেইনট্রি হোটেলের মালিকদের তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2017, 06:54 AM
Updated : 15 May 2017, 02:17 PM

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, আগামী ১৭ মে বেলা ১১টায় তাদের কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের সদরদপ্তরে কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলা হয়েছে। 

ঢাকার বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক। এই পরিবারের বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালানের অভিযোগ থাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে একটি অনুসন্ধান কমিটি করে তদন্ত চালাচ্ছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

এর অংশ হিসেবে রোববার ঢাকায় আপন জুয়েলার্সের পাঁচ বিক্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে ২৮৬ কেজি স্বর্ণালঙ্কার এবং ৬১ গ্রাম হীরা ‘আটক’ করেছেন শুল্ক গোয়েন্দারা।

মইনুল খান জানান, স্বর্ণ ও রত্ন সংগ্রহের তথ্যে অস্বচ্ছতা এবং মালিকের ‘অবৈধ সম্পদের’ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবেই শুল্ক আইনের বিধান অনুসারে ওই অলঙ্কার তারা আটক করেছেন।

রোববার তিনি বলেন, এসব পণ্যের কাগজপত্র যাচাই করে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রতিষ্ঠান মালিকের বিরুদ্ধে চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার ওই একই সময়ে শুল্ক গোয়েন্দারা বনানীর রেইনট্রি হোটেলেও অভিযান চালান, যেখানে গত ২৮ মার্চ সাফাত ও তার বন্ধুরা দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণ করে বলে মামলার অভিযোগ।

ওই অভিযানে হোটেলের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি করে ১০ বোতল বিদেশি মদ ও নথিপত্র জব্দ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। তারা বলছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ বারের লাইসেন্স দেখাতে না পারলেও সেখানে মদ রাখা হয়েছিল।

ধর্ষণের ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রস্থল রেইনট্রি হোটেল

গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট নিবন্ধন নিলেও কোনো অর্থ পরিশোধ না করে ওই হোটেল কর্তৃপক্ষ আট লাখ ১৫ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলেও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অভিযোগ।

অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শাফিউর রহমান রোববার জানান, ভ্যাট ফাঁকি, শুল্ক ফাঁকি এবং মানি লন্ডারিং- এই তিন আইনে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করবেন তারা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বি এইচ হারুনের ছেলে মাহির হারুন রাজধানীর বনানীর এই চার তারকা হোটেলটির মালিক। মাহিরের বন্ধু পরিচয় দিয়েই সাফাত ধর্ষণের ঘটনার দিন ওই হোটেলে উঠেছিলেন বলে হোটেলকর্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন।

ধর্ষণের আসামি সাফাত ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফকে সিলেট থেকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।