বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম ও সহকারী শিক্ষকদের একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণসহ শিক্ষকদের অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তার ন্যায় সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একাংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2017, 10:21 AM
Updated : 2 May 2017, 10:21 AM

মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একাংশের সাধারণ সম্পাদক গাজীউল হক চৌধুরী তাদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।

এসব দাবি আগামী ১০ মের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে কর্মবিরতিতে যাওয়াসহ কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ সংগঠনটি।

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডসহ সংশ্লিষ্ট স্কেলে (টাইমস্কেলসহ) বেতন ও সহকারী শিক্ষকদের একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থাসহ সহকারী শিক্ষক পদকে ‘এন্ট্রি পদ’ ধরে পরিচালক পর্যন্ত শতভাগ পদোন্নতির সুবিধা, স্টেনোগ্রাফারদের পদোন্নতি বাতিল করে প্রধান শিক্ষকদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী মনিটরিং অফিসার, সহকারী ইনস্ট্রাকটর পদে দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।

এছাড়া সমাপনী পরীক্ষা ছাড়া বিদ্যালয়ের অন্যান্য পরীক্ষা আগের মতো বিদ্যালয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরিসহ পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা এবং প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি ‘নন ভেকেশনাল’ হিসেবে গণ্য করা।

দাবির বিষয়ে গাজীউল হক বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্র্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা দিলেও তারা বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সকল দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের বেতন দশম গ্রেডে থাকলেও প্রধান শিক্ষকরা একাদশ গ্রেডে বেতন পান। প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণ ও বেতনের সঙ্গে আগের টাইমস্কেল যুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়া ১৪তম গ্রেডে থাকা সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে উন্নতি করার দাবি জানান তিনি।

সম্প্রতি স্টেনোগ্রাফারদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের এ নেতা বলেন, এইচএসসি পাস করা স্টেনোগ্রাফারদের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা করা হয়েছে, কিন্তু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের এসব পদে নিতে পারত।

এ কারণে শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন অভিযোগ করে গাজীউল হক স্টেনোগ্রাফারদের পদোন্নতি বাতিলের দাবি করে শিক্ষক থেকে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ অন্যান্য পদে পদোন্নতির দাবি জানান।

সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বঞ্চিত বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সরকারি অন্য কর্মকর্তাদের ন্যায় শিক্ষকদেরও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে তা বাস্তবায়নে আগামী ১০মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে দাবি আদায়ে ১১ মে প্রতিটি উপজেলা সদরে মানববন্ধন ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের কাছে আবেদন জানানো হবে বলে জানান প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এই অংশের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম তোতা।

পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে কর্মবিরতিসহ ধারাবাহিক অন্যান্য কর্মসূচির বিষয়ে তিনি জানান, ১৬মে সকাল ১০ থেকে বেলা ১১টা এবং ১৭ মে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট তিন ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হবে।

পরে ১৮ মে প্রতি জেলায় মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি, ৮ জুলাই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি এবং ১৫ জুলাই পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে দাবিতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানান আনোয়ারুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ ভূইয়া, সাহিত্য সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।