পারো থেকে ড্রুক এয়ারের একটি ফ্লাইটে রওনা হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে এবং থিম্পুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত যিষ্ণু রায় চৌধুরী পারো বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদায় জানান।
এই সফরে দুই দেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী অটিজম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন এবং থিম্পুর হেজো-তে বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন।
শেখ হাসিনা মঙ্গলবার পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবধর্না এবং গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়।
সহযোগিতার নতুন পথ খুঁজতে রাতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
শীর্ষ বৈঠকের পর দ্বৈত কর প্রত্যাহার, বাংলাদেশের নৌপথ ভুটানকে ব্যবহার করতে দেওয়া, কৃষি, সংস্কৃতি ও পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে সই করে প্রতিবেশী দুই দেশ।
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক জানান, ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে ভুটানের সমর্থনও চেয়েছেন। জলবিদ্যুতে সহযোগিতা নিয়েও তাদের আলোচনা হয়েছে।
শেরিং তোবগে ভুটানের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে একটি তহবিল গড়ার কাজে বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইলে শেখ হাসিনা তাকে সহায়তার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে ভূটানে চিকিৎসক নেওয়া এবং বাংলাদেশে ভুটানের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে।
বুধবার সকালে থিম্পুর রয়্যাল ব্যাঙ্কোয়েট হলে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
বিকালে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে অটিজম ও অন্যান্য নিউরোডেভেলপমেন্ট সমস্যার যথায সমাধানে সক্ষমতা অর্জন শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
ওই আলোচনায় সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন, যিনি বাংলাদেশের জাতীয় অটিজম বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন।
বুধবার দুপুরে থিম্পুর হেজোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। ভুটানের রাজাও উপস্থিত ছিলেন ওই অনুষ্ঠানে।
এর আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দামঘো দর্জি জমি হস্তান্তর চুক্তিতে সই করেন।
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছিলেন।