মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও হত্যার মত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের মধ্যে।
বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ঠিক করে দেয়।
প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আগামী ১২ জুন এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
আসামিদের মধ্যে আব্দুর রহমান ২০১৫ সালের ১২ আগস্ট গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে কারাগারে আছেন। অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বুধবার তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
বাকি পাঁচ আসামি শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা, মো. আব্দুল খালেক তালুকদার, মো. কবির খান, আব্দুস সালাম বেগ ও নুরউদ্দিন শুরু থেকেই পলাতক।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন মোখলেসুর রহমান বাদল। সঙ্গে ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নী। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
আদালতের কার্যক্রমের শুরুতে প্রসিকিউটর বাদল দাঁড়িয়ে অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য আরজি জানালে বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, এ মামলার ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনই পলাতক। ফলে তাদের অনুপস্থিতিতেই আদেশ দিতে হচ্ছে।
এরপর তিনি প্রসিকিউশনের আনা সাতটি অভিযোগ পড়ে শোনান এবং আসামি রহমানের কাছে জানতে চান- তিনি দোষী না নির্দোষ।
এ সময় আব্দুর রহমান নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চান। আদালত পরে অভিযোগ গঠন করে এ মামলার আসামিদের বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
নেত্রকোণার পূর্বধলার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির একাত্তরে তার বড় ভাই আব্দুল খালেককে হত্যার ঘটনায় এই ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে একটি মামলা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ২১ অগাস্ট বাড়হা গ্রামে আব্দুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয় ওই মামলায়।
পরে মামলাটি পাঠানো হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রসিকিউশনের তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরের বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত তদন্ত করে প্রতিবেদন দেন। এর মধ্যেই আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত বছরের ১৬ মার্চ এ মামলার অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করে। আটজনকে অপহরণের পর হত্যা, তিনটি বাড়ির মালামাল লুট, আটটি ঘরে অগ্নিসংযোগ ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।
এরপর গত বছরের ২২ মে ছয় আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
পলাতক আসামিদের পক্ষে এ মামলা লড়তে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর গাজী তামিমকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয় ট্রাইব্যুনাল। তিনি আব্দুর রহমানেরও আইনজীবী।