প্রতিবেদন জমার সর্বশেষ নির্ধারিত দিন মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় ঢাকার মহানগর হাকিম এ কে এম মঈনুদ্দীন সিদ্দিকী আগামী ২১ মে প্রতিবেদন জমার নতুন দিন ঠিক করেন।
এনিয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত ১৩টি দিনে তদন্ত কর্মকর্তা তা দিতে পারেননি বলে জানান আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জালাল উদ্দিন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত সুপার রায়হান উদ্দিন খান মঙ্গলবার প্রতিবেদন দাখিল করেননি। পরে মহানগর হাকিম প্রতিবেদন দাখিলের সময় পিছিয়ে দেন।
এর আগে গত ১৯ মার্চও প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত দিনে তা দিতে পারেনি সিআইডি। তখন প্রায় একমাস পিছিয়ে প্রতিবেদন জমার জন্য ১৮ এপ্রিল সময় দিয়েছিল আদালত। এদিনও প্রতিবেদন দিতে না পারায় ফের আরও একমাস সময় পেল মামলাটির তদন্ত সংস্থা।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ওই বছরের ১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করেন।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করা এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত বছরের ১৯ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দিন ধার্য করে দেয় আদালত।
সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার রিজার্ভের অর্থ ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকে যাওয়ার পর ইতোমধ্যে দেড় কোটি ডলার ফেরত এসেছে, বাকি অর্থ উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ।
বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা এই সাইবার চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলায় সিআইডির তদন্তের পাশাপাশি সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটিও তদন্ত করে।
ফরাসউদ্দিনের কমিটি গত বছরের ৩০ মে অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দিলেও এ পর্যন্ত কয়েকদফা ঘোষণা দিয়ে তা প্রকাশ করেননি অর্থমন্ত্রী।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজগ থাকতে পারে বলে অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি চুরি যাওয়া রিজার্ভের বাকি অর্থ ফিলিপিন্স থেকে উদ্ধারে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে সরকারের।
ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মালআবদুল মুহিত বলেছেন, বাকি অর্থ ফেরত এলে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে।
মন্ত্রীর ভাষ্য, ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকে অর্থ যাওয়ার পরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তা ছাড় না করতে বলা হলেও তারা তা না শোনায় ব্যাংকটি দায় এড়াতে পারে না। সেক্ষেত্রে ফরাসউদ্দিন কমিটির তদন্ত রিপোর্টের কারণে নিজেদের দায় এড়িয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে রিজল ব্যাংক।