নাসরিনের সঙ্গে সমঝোতার পরামর্শ ক্রিকেটার সানিকে

স্ত্রীর দাবি নিয়ে আদালতে আসা নাসরিন সুলতানার সঙ্গে সমঝোতা করতে ক্রিকেটার আরাফাত সানিকে পরামর্শ দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2017, 02:56 PM
Updated : 10 April 2017, 02:56 PM

ওই তরুণীর করা নারী নির্যাতন মামলায় সানি স্থায়ী জামিন চাইলেও সোমবার তাকে আরও এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে সমঝোতার ওই পরামর্শ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা।

মামলার বাদী ২৩ বছর বয়সী ওই তরুণীর বাসা মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকায়। মেয়েটির দাবি, সাত বছর আগে সানির সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেম হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তারা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেন। এরপর বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেওয়ার কথা বললেও সানি সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন।

গত ৫ জানুয়ারি তিনি মোহাম্মদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করলে চলতি বছর ২২ জানুয়ারি সাভারের আমিন বাজার এলাকা থেকে সানিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর তার বিরুদ্ধে যৌতুক আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরও দুটি মামলা করেন নাসরিন সুলতানা।

পরে তার অনাপত্তিতে তিন মামলাতেই জামিন পান এক সময় জাতীয় দলে খেলা স্পিনার সানি। 

এর মধ্যে নারী নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় এক মাসের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন আরাফাত সানি। তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম জুয়েল আহম্মদ।

শুনানিতে বিচারক মামলার বাদী নাসরিন সুলাতানাকে জিজ্ঞেস করেন, সানির সঙ্গে তার কোনো ধরনের সমঝোতা হয়েছে কি না।

জবাবে নাসরিন বিচারককে বলেস “আমাদের মধ্যে কোনো ধরনের সমঝোতা হয়নি।”

এ সময় সানির আইনজীবী জুয়েল আদালতকে বলেন, “সমঝোতা হয়নি; তবে সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছে।”

পরে বিচারক নাসরিনকে জিজ্ঞেস করেন, “আপনি তার (আরাফাত সানী) সঙ্গে সংসার করছেন?”

জবাবে নাসরিন ‘না’ বলেন।

এরপর বিচারক আরাফাত সানীকে স্থায়ী জামিন না দিয়ে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন দেন। ওই সময়ের মধ্যে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক।

নারী নির্যাতন দমন আইনের এ মামলার আর্জিতে ওই তরুণী দাবি করেছেন, বিয়ের পর ২০১৫ সালের ২৯ জুলাই সানি তার কাছে ২০ লাখ টাকা যৌতুক চান। ওই টাকা না দিলে সানি তার সঙ্গে ঘর সংসার করবেন না বলে জানান তার মা। তারপর সানি ওই তরুনীকে মারধর-গালিগালাজ করে বাসায় ফেলে চলে যান।

আর ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনে করা মামলায় ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে মারধর করার অভিযোগ আনা হয় সানির বিরুদ্ধে।

এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ থাকায় ওই তরুণী সানিকে বলেন, হয় তাকে তুলে নেওয়া হোক, না হলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হোক।

এরপর গত বছর জুন মাসে সানি ফেইসবুকে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে তাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি এবং ওই তরুণীর কয়েকটি ছবি তাকে পাঠান এবং নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন।

তথ্য প্রযুক্তি আইনের এ মামলায় ইতোমধ্যে সানির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। সানির সঙ্গে নাসরিনের বিয়ে হয়েছিল বলে ওই অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।