ভারতের সঙ্গে চুক্তির সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি

শেখ হাসিনার সফরে ভারতের সঙ্গে কতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তার সংখ্যা নিয়ে নানা রকম তথ্য এসেছে।

সুমন মাহবুব নয়া দিল্লি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2017, 03:41 PM
Updated : 8 April 2017, 08:25 PM

শনিবার হায়দ্রাবাদ হাউজে শীর্ষ বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মোট ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের তথ্য জানিয়ে তার তালিকা তাদের ওয়েবসাইটে তোলা হয়।

এরপর দুই দেশের যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়, তাতে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের সঙ্গে ‘বিজনেস ডকুমেন্ট’ মিলিয়ে ৩৪টি দলিল স্বাক্ষরের কথা জানানো হয়।

সন্ধ্যায় নয়া দিল্লির হোটেল তাজমহলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক জানান, দুই দেশের মধ্যে মোট ৩৬টি দলিল সই হয়েছে।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৩৬টি এমওইউ, এগ্রিমেন্ট এবং এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) স্বাক্ষরিত হয়েছে।”

চুক্তির সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির কথা ভারতের সাংবাদিকরা জানালে শহীদুল হক তাদের নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সেই প্রশ্ন করার পরামর্শ দেন।

৩৬টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি কী কী নিয়ে- তা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব হাসতে হাসতে বলেন, “এখনও গুণে শেষ করতে পারিনি।”

এর মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক কেনাকাটায় ৫০ কোটি ডলারের একটি ঋণ সহায়তার সমঝোতা স্মারকও সই হয়।

এ বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, “এই টাকায় কেবল যে ভারত থেকেই অস্ত্র কিনতে হবে; তার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।”

ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে বিএনপি সমালোচনা করে আসছে। ভারতীয় অস্ত্র কেনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল তারা।

শীর্ষ বৈঠকে বাংলাদেশও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহায়তা বাড়াতে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “প্রশিক্ষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সহযোগিতা; এই আছে।”

নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম সফর। এই সফরকে নয়া দিল্লি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারাও বলছেন।

শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে মোদীর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন হাসিনা।

শহিদুল হক (ফাইল ছবি)

একান্ত বৈঠকের বিষয়ে শহীদুল হক বলেন, “দুই নেতার মধ্যে ৩০ মিনিটের একান্ত বৈঠক হয়েছে। আমি শুনেছি, অত্যন্ত ভালো পরিবেশে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে ভারতের পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি মোদী দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

সচিব বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। 

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং বঙ্গবন্ধুর বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বঙ্গবন্ধুর নামের সড়ক উদ্বোধনের পর হায়দ্রাবাদ হাউজের ব্যানকোয়েট হলে শেখ হাসিনা তার সম্মানে দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেন। 

এরপর বিকালে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান শেষে শেখ হাসিনা মাওলানা আজাদ রোডে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারীর বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আজকের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বিষয়ে তারা আলোচনা করেন।

আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা ‘প্রকাশ করা যাবে না’ বলে সাংবাদিকদের জানান শহীদুল হক।