মৌলভীবাজারে সোয়াট যাচ্ছে, প্রয়োজনে সেনাবাহিনী: মন্ত্রী 

মৌলভীবাজারের দুটি এলাকায় দুটি বাড়ি ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে অভিযান শুরু করেছে সেখানে জনা দশেক জঙ্গি থাকতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2017, 08:44 AM
Updated : 29 March 2017, 02:13 PM

সচিবালয়ে বুধবার নিজের দপ্তরে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় মন্ত্রী বলেন, পুলিশের বিশেষ ইউনিট সোয়াটের সদস্যরা ইতোমেধ্যে মৌলভীবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে, প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও সম্পৃক্ত হবে।

বুধবার ভোরে মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট এবং সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজারের কাছে নাসিরপুর গ্রামে ওই দুটি বাড়ি ঘিরে অভিযান শুরু করে স্থানীয় পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

দুটি বাড়ি থেকেই থেমে থেমে গুলি ছোড়ার পাশাপাশি বোমা বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। বাড়ি দুটি ঘিরে থাকা পুলিশও পাল্টা জবাব দিচ্ছে।   

মন্ত্রী জানান, জঙ্গিদের ‘দু-একটি আস্তানার খবর’ পাওয়ার পর সেই সূত্র ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মৌলভীবাজারের ওই বাড়িগুলোতে যায়

“তারা যখন ভেতরে ঢুকতে চায় তখন দেখা গেল বোমা বিস্ফোরণ ও গোলাগুলি হচ্ছে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে। বাড়িগুলো থেকে গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। বিশেষ বাহিনী সোয়াট ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল রওনা দিয়েছে, তারা সেখানে পৌঁছালে বাকি কাজ করবে।”

(ফাইল ছবি)

এক প্রশ্নের জবাবে কামাল বলেন, “প্রাথমিকভাবে যেটুকু পেয়েছি, যেটা শহর এলাকায়, সেখানে যারা অবস্থান করছে তারা ৩/৪ জন হতে পারে। খলিলপুর ইউনিয়নে আরও দু’চারজন বেশি থাকতে পারে। খলিলপুর ইউনিয়নে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যে দু’একজন মহিলা সদস্য সেখানে থাকতে পারে। থেকে থেকে তারা বোমা ছুড়ছে। ইউনিট পৌঁছে গেলে অভিযান পরিচালনা করবে।”

মৌলভীবাজারের ওই দুই বাড়িতে ‘বিশেষ কেউ’ আছে কি না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “থাকতে পারে, প্রাথমিক ধারণাটা আমরা বললাম, বড় কেউ (জঙ্গি) হয়ত থাকতে পারে।”

সিলেটের মত মৌলভীবাজারের দুই বাড়িতে অভিযান পরিচালনায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নে কামাল বলেন, “প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নেব, তবে সোয়াট এনাফ।”

মন্ত্রী বলেন, প্রাণহানি এড়াতে সিলেটে ‘অধিকতর সতর্কতার সঙ্গে’ অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেনাবাহিনীকে।

“এখানে (মৌলভীবাজার) যদি প্রয়োজন হয়… আমরা চাই প্রাণহানী যেন না ঘটে, প্রাণহানি কমাতে যা করা প্রয়োজন তাই করব।”

সিলেট অঞ্চলে জঙ্গিরা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে কামাল বলেন, “সিলেট অঞ্চল থেকে শেল্টার নিচ্ছে, তারা সেখানে অবস্থান করছে এসব তথ্য রয়েছে। কেন তারা সেখানে যায় সেগুলো আরেকটু ভালো করে অনুসন্ধান না করে বলতে পারছি না। কেন সেখানে যায়, লিংকটা কী, কারা করছে নিশ্চয়ই এর পেছনে রাজনৈতিক কোনো আশ্রয় প্রশ্রয় থাকতেও পারে, সেটা আমাদের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মাঝে মাঝেই বলছেন।”

গোয়েন্দা তথ্যের আলোকে সীতাকুণ্ড ও সিলেটের  জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও করা হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মৌলভীবাজারেও একই ঘটনা ঘটেছে।

“গোয়েন্দারা তৎপর রয়েছে, সেজন্য ধরে ফেলেছি। (জঙ্গিবাদ) বাড়ার প্রশ্নই আসে না। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে যদি ৫০-৬০ জন পথভ্রষ্ট হয়, যারা অমানবিক কাজ করে, ধর্মের বাইরে গিয়ে কাজ করে তাহলে কি বলবেন যে সবাই এখানে আতঙ্কিত হয়ে গেছে? এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। খুবই সামন্য এদের সংখ্যা।”

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে জঙ্গি দমনে এ ধরনের অভিযান নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে প্রশ্ন তুলেছেন- সে বিষয়টি সরকার কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এটার সঙ্গে ভারত সফরের কোনো যোগাযোগ নেই। এটা হল আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম।”

মুফতি হান্নান প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ওই আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছে, তিনিই সিদ্ধান্ত দেবেন।