উপহারে অনিয়ম: এরশাদের আপিলের রায় ২৩ মার্চ

দুই যুগ আগের একটি দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2017, 11:11 AM
Updated : 9 March 2017, 11:12 AM

আগামী ২৩ মার্চ রায়ের দিন বৃহস্পতিবার ঠিক করে দিয়েছে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক হাই কোর্ট বেঞ্চ।

রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় উপহার নিয়ে তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়ায় দুর্নীতির দায়ে এরশাদকে তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত।

সামরিক শাসক এরশাদ গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি করেছিল। ব্যুরো বিলুপ্ত হওয়ায় সেই মামলাগুলো এখন দুর্নীতি দমন কমিশন পরিচালনা করছে।

দুদকের কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাজার বিরুদ্ধে এরশাদের আপিলের শুনানি গত বছরের ৩০ নভেম্বর শুরু হয়। মোট পাঁচদিন শুনানি হয়েছে। আগামী ২৩ মার্চ রায় দেবে হাই কোর্ট।

“শুনানিতে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখার আরজি জানিয়েছি,” বলেন দুদকের কৌঁসুলি।  

১৯৯১ সালের ৮ জানুয়ারি দায়ের করা এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বিভিন্ন উপহার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে এরশাদ এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকার আর্থিক অনিয়ম ঘটিয়েছেন।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায়ে এরশাদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। এরশাদ ওই বছরই হাই কোর্টে আপিল করলে দণ্ড স্থগিত হয়ে যায়।

দুই দশক পর ২০১২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন এ মামলায় পক্ষভুক্ত হয়। শুনানির জন্য এর আগে একবার আদালতে উপস্থাপন করা হলেও পরে তা আর এগোয়নি। গত অগাস্টে আবারও এই আপিল শুনানির উদ্যোগ নেয় দুদক।

শুনানির দিন চেয়ে দুদকের আবেদনে গত বছরের ১ নভেম্বর বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ ১৫ নভেম্বর শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দেয়।

এইচ এম এরশাদ (ফাইল ছবি)

ওইদিন এরশাদের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম শুনানির জন্য নিজের প্রস্তুতি ও এরশাদ গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে চার সপ্তাহের সময়ের আবেদন করলে আদালত শুনানির জন‌্য ৩০ নভেম্বর নতুন তারিখ রাখে।

ওইদিন বিচারক এরশাদের আইনজীবীকে বলেছিলেন, “১৯৯২ সালের মামলা এখনও যদি বিচারাধীন থাকে তাহলে হাই কোর্টের দরজা বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।

“তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট হলেও আলাদা কোনো সুযোগ পাবেন না। আইন সবার জন্য সমান। আপনাকে শেষ সুযোগ দেওয়া হল। এরপর আপনাকে আর সুযোগ দেওয়া হবে না।”

রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলায় ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান।

১৯৯০ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় তিন ডজন মামলা হয় এরশাদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তার সাজার আদেশ হয় এবং একটিতে তিনি সাজা খাটা শেষ করেন।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এরশাদ নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দেন, তাতে তখনও আটটি মামলা থাকার কথা বলা ছিল। বাকি মামলাগুলো থেকে তিনি খালাস বা অব্যাহতি পেয়েছেন, অথবা মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

এই আট মামলার মধ্যে চারটির কার্যক্রম উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। মঞ্জুর হত্যাসহ তিনটি মামলা বর্তমানে চালু রয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূতের মর্যাদায় রয়েছেন। বিএনপিবিহীন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার ভূমিকায় রয়েছেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ।