খালেদার নাইকো মামলা স্থগিত

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2017, 07:48 AM
Updated : 7 March 2017, 12:01 PM

খালেদা জিয়ার করা এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়।

আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

পরে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “হাই কোর্ট রুল দিয়েছে, আর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছে।”

খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ মামলায় মওদুদ আহমেদের বিষয়ে রুলের শুনানি হচ্ছে। সেই শুনানি না হওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

“তবে আমরা আদালতে বলেছি, দুদকের মামলা শুনানির জন্য এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত রয়েছে। এই আদালতের সেই এখতিয়ার নেই। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার হলেও আদালত আমাদের আবেদন শোনেননি। এই যুক্তিতে আমরা আগামীকাল আপিল বিভাগে যাব।”

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

পরের বছর ৫ মে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোপত্রে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

এর বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট। সাত বছর পর রুল শুনানি করে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে খালেদাকে জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। আপিল বিভাগেও ওই আদেশ বহাল থাকে।

মামলাটি বর্তমানে ঢাকার নয় নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও দলটির নেতা মওদুদ আহমেদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ এ মামলার আসামি।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সালিশি আদালতে পেট্রোবাংলা, বাপেক্সের সঙ্গে নাইকোর চুক্তি ও দুর্নীতি সংক্রান্ত বিরোধের মামলা চলার কারণ দেখিয়ে গতবছর হাই কোর্টে যান এ মামলার আসামি মওদুদ। এরপর গত ১ ডিসেম্বর হাই কোর্ট মওদুদের বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়। দুদক এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলেও স্থগিতাদেশ বহাল থাকে।

মওদুদ স্থগিতাদেশ পেলেও তার দলীয় প্রধান খালেদার বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে এ মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে সেসময় জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।

মওদুদের মতই সালিশি আদালতের যুক্তি দেখিয়ে নিম্ন আদালত ঘুরে হাই কোর্টে এসে স্থগিতাদেশ পেয়েছেন খালেদা জিয়া। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছে আদালত।

এর জবাব দিতে বিবাদীদের ৪ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে বলে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন।