বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চ গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে ‘কানেকটেড বাংলাদেশ’ নামে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ডিজিটাল নেটওয়ার্ক কোঅর্ডিনেশন কমিটির (ডিএনসিসি) সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তথ্য ও যোগোযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মোবাইল ফোন অপারেটরদের মোট আয়ের এক শতাংশ কেটে নিয়ে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল গঠন করে বিটিআরসি। এরপর থেকে ওই তহবিলে অর্থ জমছে।
‘কানেকটেড বাংলাদেশ’ এর মধ্য দিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন বিটিআরসির এই অলস অর্থ ব্যয়ের পথ খুলল।
প্রতিমন্ত্রী পলক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ইতোমধ্যে ইনফো সরকার-৩ প্রকল্পের মাধ্যমে দুই হাজার ৬০০টি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগের কাজ করা হচ্ছে, আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে এক হাজার ২১৩ ইউনিয়নের ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগের কাজ চলছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বিঘ্ন টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে বাকি ৭৭২টি ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগের জন্য বিটিআরসির তহবিলে পড়ে থাকা টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানান তিনি।
পলক বলেন, “বিটিআরসির সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (স্যোসাল অবলিগেশন ফান্ড-এসওএফ) থেকে ৬০০ কোটির বেশি অর্থ এ প্রকল্পে ব্যয় করা হবে।”
সরকারের এক বিভাগের টাকা অন্য বিভাগে খরচে কোনো সমস্যা রয়েছে কি না- এপ্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকারের টাকা যে কোনো উন্নয়নে ব্যবহার করা যায়।”
বিদেশি ঋণের উপর নির্ভর না করে নিজস্ব টাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগ দিতে এ উদ্যোগ বলে জানান পলক।
“আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে সব ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক কেবল পৌঁছে দেওয়া সরকারের লক্ষ্য। দেশের কোনো অঞ্চলই যেন বাদ না থাকে, সে চেষ্টা আমরা করছি।”
প্রকল্পটি প্রাথমিক মূল্যায়ন পর্যায়ে রয়েছে এবং চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ প্রকল্পে মোট খরচ হবে ৬৫২ কোটি টাকা।
অলস পড়ে থাকা এই টাকায় ওয়াইফাই হটস্পট, দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেলিযোগাযোগ সেবায় ব্যয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল ডাক ও টেলিযোগাযাগ বিভাগ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, বিটিআরসির ওই তহবিলে অর্থ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই।
“এটি এফডিআর করে রাখা হয়েছে। এটি আমাদের দেশের ফান্ড এটি এফডিআর করে রেখে দিলে অলস অর্থ দাড়ায়, এটিকে কাজ লাগাতে হবে।”
তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রস্তাবে সায় দেওয়ার বিষয়ে তারানা বলেন, “আমরা বলছি ইন্টারনেট ফর অল, তাই প্রত্যন্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক পৌছে দিতে চাই, ব্যবসা নয় নির্ভেজাল জনকল্যাণে এই ফান্ড ব্যবহার করার ইচ্ছা রয়েছে।”
অলস এই টাকায় ওয়াইফাই হটস্পটসহ অন্যান্য পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, “এসওএফ কীভাবে ব্যবহার হবে সেজন্য কমিটি আছে, সে কমিটির প্রধান প্রধানমন্ত্রী। এ টাকা কিভাবে ব্যবহার করা হবে কিছু নীতিমালা অনুযায়ী হয়। ফান্ডে টাকা জমা হচ্ছে আগামীতে আমরা সেসব কাজ করব।”