বিচার বহির্ভূত হত্যাই বাংলাদেশে বড় সমস্যা: যুক্তরাষ্ট্র 

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র, আর এর পেছনে সরকারের মদদ রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছে দেশটি।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2017, 03:23 AM
Updated : 5 March 2017, 11:28 AM

২০১৬ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, অসাম্প্রদায়িক, বহু মতের সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশ বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেসামরিক প্রশাসনের ‘কার্যকর নিয়ন্ত্রণ’ রয়েছে।

এরপর জঙ্গিবাদ নিয়ে আলোচনার পরপরই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।

এছাড়া অবৈধভাবে আটক, সরকারি বাহিনীর হাতে গুম, জঙ্গিদের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড, বাল্য বিয়ে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা,শ্রমিকদের জন্য অনিরাপদ কর্মপরিবেশের বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগজনক বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।

জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগের কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশ-বিদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো সরব হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দুদিন আগেই বলেছিলেন, দেশে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে না।

এই ধরনের কোনো অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ খুবই সীমিত।

বন্দুকযুদ্ধের মতো ঘটনাগুলোকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবেই দেখছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো

এসব ঘটনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায় মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষণ।

“নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোর তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ সীমিত।”

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর আস্থাহীনতার কারণে জনগণ অনেক সময়েই তাদের শরণাপন্ন হয় না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।  

বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে ‘ভিকটিমদের’ দায়ী করে সরকারের বক্তব্যের সমালোচনাও করা হয়েছে, যা প্রকারান্তরে নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়মুক্ত করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি।

বাংলাদেশের বিচার বিভাগের দুর্বলতা এবং বিচার ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে আটকের বিষয়টিও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সহিংসতার কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এছাড়া অনলাইনে মত প্রকাশ এবং এনজিওগুলোর কাজে নিয়ন্ত্রণ আরোপকেও দেখানো হয়েছে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে।