নম্বর জরুরি সহায়তার, ফোন বেশি আসে কৌতূহলের

জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সহায়তা দিতে চালু করা হেল্পলাইনে সাড়ে তিন মাসে যেসব ফোন কল এসেছে, তার প্রায় ৭০ শতাংশই ছিল নাগরিকদের কৌতূহলী ফোন।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2017, 03:48 AM
Updated : 18 Feb 2017, 04:18 AM

গত অক্টোবরে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস (৯৯৯) চালু করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

তাদের হিসাবে জানুয়ারির শেষ নাগাদ কল এসেছে ১৩ লাখ ৩৫৩টি, তার নয় লাখের বেশি কল হয় ৯৯৯ সম্পর্কে কৌতূহল নিয়ে।

এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য বা যৌক্তিক কল ছিল তিন লাখ ৯৯ হাজার ২৮৬টি।

এসব ফোন কলের মধ্যে ৬৮ শতাংশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়ক, ২৭ শতাংশ ফায়ার সার্ভিস এবং বাকি ৫ শতাংশ স্বাস্থ্য বা অ‌্যাম্বুলেন্স বিষয়ক।

সমাধান দেওয়া হয়েছে ফায়ার সার্ভিস বিষয়ক দুই হাজার ১৬৬টি, আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক চার হাজার ৯৫৫টি এবং অন্যান্য তিন হাজার ১১৮টি।

.

বাকি তিন লাখ ৮৯ হাজার জন নিয়েছেন সাধারণ তথ্য (থানা, হাসপাতালের ঠিকানা ও অন্যান্য বিষয়ে)।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এসব কলের মাত্র ১১ শতাংশ করেছেন নারীরা। 

প্রায় অর্ধেক (৪৭%) কল এসেছে ঢাকা থেকে, এরপর ১১ শতাংশ গাজীপুর থেকে এবং বাকিগুলো অন্যান্য জেলা থেকে।

এ প্রকল্পে কল সেন্টারে বর্তমানে ১০০ জন কাজ করছেন। প্রতি শিফটে থাকেন ২৫ জন অর্থাৎ একই সময়ে ২৫টি কল ধরা যায়। বর্তমানে কল সেন্টার ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে বলে জানিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।   

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, “দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা দায়িত্বপালন জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অঙ্গীকার। সে লক্ষ্যে জনগণকে অতীব জরুরি নাগরিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা ও সহজতম উপায়ে সরকারি সেবা প্রদান করতে পরীক্ষামূলকভাবে আমরা ন্যাশনাল হেল্প ডেস্ক তথা ৯৯৯ সেবা চালু করেছি।

জুনাইদ আহমেদ পলক

“দেশীয় পরিপ্রেক্ষিতে কীভাবে এ সেবা আরও আধুনিক করা যায়, সেজন্য এখন গবেষণা ও উন্নয়ন চলছে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রম হতে প্রাপ্ত সকল তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ, সংশ্লিষ্ট সকল স্টেক-হোল্ডারদের সাথে প্রয়োজনীয় আলোচনা এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টার নির্দেশনা মোতাবেক আগামীতে পুরো পরিসরে এ সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।” 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ পরীক্ষামূলক কাঠামোর মাধ্যমে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দিতে ১১ অক্টোবর পাইলট কর্মসূচির আওতায় ৯৯৯ সেবাটি চালু করে। জাতীয় হেল্পডেস্ক নামে এর যাত্রা শুরু হলেও পরে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস নাম হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্লাস ওয়ানের সেবাগুলোর সমন্বয়ে ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এই সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

জরুরি সেবা ছাড়াও প্রয়োজনীয় সরকারি সেবা, জীবন ও জীবিকা বিষয়ক তথ্য পরামর্শ দেওয়াও এই কর্মসূচির লক্ষ‌্য।

৯৯৯ কলসেন্টারের মাধ্যমে শুধু জরুরি সেবা এবং অন্যান্য সাধারণ সেবা ও জীবন জীবিকা বিষয়ক তথ্য পরামর্শ সেবা ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেওয়া হয়।

ভবিষ্যতে এই হেল্পডেস্ক বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য তথ্য ও সেবা প্রাপ্তির একটি ওয়ান স্টপ উইন্ডো হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

এছাড়া জরুরি ও সাধারণ সেবার বিভিন্ন কন্টেন্ট ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে প্রচার করে মানুষকে সচেতন করে তোলাও এই কর্মসূচির আরেকটি লক্ষ্য বলা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে ৯৯৯ এর প্রায় ৩০ হাজার মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করা হয়েছে। http://bit.ly/2fqnhey লিঙ্ক থেকে এই অ‌্যাপ ডাউনলোড করা যাবে।