‘রাতে নয়, সকালেই হোক প্রভাতফেরি’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে মধ্যরাতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর ইদানিংকালের রীতি বদলে সর্বত্র প্রভাতফেরির পুরনো রীতির মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানোর দাবি এসেছে ভাষা আন্দোলন নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভা থেকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2017, 05:44 PM
Updated : 17 Feb 2017, 05:44 PM

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু, জাতিসত্তা, জাতিরাষ্ট্র’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এবিষয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম ইনামুল হক বলেন, ‍“বঙ্গবন্ধু বাংলাকে যেভাবে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেছেন, আমরা কি সেই প্রচেষ্টায় আছি?

“বাংলা সংস্কৃতিতে রাত ১২টায় কি দিন হয়? আমরা রাতে কেন শহীদ মিনারে ফুল দেই? ছোটবেলা তো আমরা সকালে প্রভাতফেরি করতাম।”

তিনি বলেন, “আগের মত প্রভাতফেরিকে আমরা ভোরবেলায় ফিরিয়ে আনব আশা করি, রাত ১২টায় প্রভাতফেরি করব না। আশা করছি রাষ্ট্রীয়ভাবে সকালে প্রভাতফেরি করা হবে।”

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর কন্যার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই; কেননা উনি যা করতেন, তার কন্যাও তা করছেন।”

বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একটা মানুষ, যিনি কিনা জেলখানায় ১৪টি বছর কাটিয়ে দিয়েছেন; তার পুরো জীবনটাই তো বাংলাদেশ।”

এসময় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে দুটি কবিতা পড়ে শোনান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এ দেশকে পেয়েছি বলেই সর্বস্তরে বাংলাভাষা ব্যবহারের চেষ্টা করি। কিন্তু দুঃখ লাগে, যখন দেখি আমাদের আজকের প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষার সেই চেতনা নেই।"

“আজকের তরুণ প্রজন্ম ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে মনে করে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। আমাদের তরুণ সহকর্মী যারা বিদেশ থেকে ডিগ্রী নিয়ে আসেন, তারা অভ্যন্তরীণ দরখাস্তের কাজে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলা বলা ও লিখতে পারা আমাদের প্রধান দায়িত্ব। আজকের গ্লোবাল ভিলেজে আমরা আরও ভাষা শিখব, কিন্তু বাংলাটা আগে।”

তবে ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে ঢাবি উপাচার্য বলেন, “মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা যখন বাংলা ভাষা শিখে বাংলায় কথা বলেন, তখন সেটি খুব ভালো লাগে।”

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এ মালেকের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানউদ্দীন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহিত উল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর আক্তারুজ্জামান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম বক্তব্য দেন।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন।