পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম বিবেচনায়: প্রধানমন্ত্রী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএমে করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2017, 03:03 PM
Updated : 15 Feb 2017, 03:03 PM

জাতীয় সংসদে বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেছেন, “সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমান বিরাজমান সকল বিধিবিধানের সাথে সঙ্গতি রেখে জনমানুষের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিংয়ের প্রবর্তন করার পরিকল্পনা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।”

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপেও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ চালুর প্রস্তাব দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

তখন আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছিলেন, ই-ভোটিং বলতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ‌্যমেই ভোটগ্রহণকে বোঝাচ্ছেন তারা।

ইভিএমে ভোট গ্রহণ ও গণনা দ্রুত হয়। এ পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার, বাক্স ও সিল লাগে না বলে তা সাশ্রয়ীও। ভোটার একটি যন্ত্রে বোতাম চেপেই তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন এবং গণনা হয় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। 

এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ইভিএম চালু করলেও স্থানীয় নির্বাচনের বাইরে তার প্রয়োগ এখনও হয়নি। বিএনপির আপত্তির মধ‌্যে ও যন্ত্র নিয়ে জটিলতায় সদ‌্য বিদায় নেওয়া কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশন ইভিএম নিয়ে এগোয়নি।

২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথম ইভিএম ব্যবহার হয়। এরপর নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি ওয়ার্ড, নরসিংদী পৌরসভা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পুরো নির্বাচন ইভিএমে হয়েছিল।

২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদায়ের আগে সংসদ নির্বাচনের জন্য ইভিএমের প্রস্তুতও রেখে গিয়েছিল শামসুল হুদার কমিশন। কাজী রকিব কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর শুধু রাজশাহী ও রংপুরে ছোট পরিসরে ইভিএম ব্যবহার করা হয়।

ইভিএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির সহায়তায় এ প্রযুক্তি চালু হলেও পাঁচ বছরের মাথায় কারিগরি ত্রুটি নিয়ে ইসি-বুয়েট দ্বন্দ্বে ইভিএম অধ্যায়ের ছেদ পড়ে।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ বেগম নুর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা চাই পরবর্তীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা হোক। সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সে উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।”

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়ার যে প্রথা চালু হয়েছে, তা আমাদের গণতন্ত্রকে মজবুত ও সমুন্নত করেছে।”

ইসি নিয়োগের আইন না হওয়ায় এনিয়ে দুই বার সার্চ কমিটি গঠনের মাধ‌্যমে ইসি রাষ্ট্রপতির নিয়োগ পেয়েছে।

বিএনপি বর্তমান সরকারের সময়কালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এলেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনে জনমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিতকল্পে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”