কাজ করেছি নিরপেক্ষভাবে: প্রধানমন্ত্রীকে বিদায়ী সিইসি

বিদায়ের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের সদস‌্যরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2017, 02:10 PM
Updated : 5 Feb 2017, 02:31 PM

রোববার সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন‌্য সাক্ষাতে যান সাংবিধানিক এই সংস্থায় গত পাঁচ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসা পাঁচজন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা যে শপথ নিয়েছিলাম, আমরা সে শপথ রক্ষায় নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছি’।”

সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী ও মো. শাহনেওয়াজ। তাদের সঙ্গে গিয়েছিলেন ইসি সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহও।

চলতি ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই বিদায় নেবে এই নির্বাচন কমিশন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের তোড়জোড় চলছে, যাদের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে।

কাজী রকিব নেতৃত্বাধীন কমিশন দশম সংসদ নির্বাচন করেছিল। ওই নির্বাচনে বর্জনকারী বিএনপি এই ইসিকে ‘সরকারের আজ্ঞাবহ’ বলে আসছে।

এই প্রসঙ্গে বিদায়ী সিইসি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোর তীব্র সহিংসতার সত্ত্বেও তারা ‘দৃঢ়তার সঙ্গে’ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করেন।

সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও কাজী রকিব কমিশনের পরিচালনায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। ওই ভোটগুলোর কথা উল্লেখ করে কাজী রকিব বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ওই নির্বাচনগুলোতে জয়লাভের পর বিএনপি তাদের ধন্যবাদও জানিয়েছিল।

স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হলেও ইসির বিষয়ে তাদের অবস্থান বদলায়নি। বিদায়ী ইসির কাজে দৃঢ়তার অভাব দেখার কথা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আলোচনায়ও এসেছে।

ইহসানুল করিম বলেন, “বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনী আইন মেনে চলায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনোদিন কোনো ফোন পাননি। সরকার প্রধান তাদের কোনো কাজে কখনোই হস্তক্ষেপ করেননি।

“প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী প্রচারণায় যেভাবে নির্বাচনী আইন মেনে চলেছেন, তা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেও উল্লেখ করেন বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার।”

‘নিজেদের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে’ নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মন্তব‌্য করেন কাজী রকিব।

সম্প্রতি নিজেদের সবশেষ সংবাদ সম্মেলনে চার কমিশনারকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ

 

৪৫ মিনিটের এই বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিদায়ের আগে এটা ছিল একটা সৌজন‌্য সাক্ষাৎ।

“প্রধানমন্ত্রী আমাদের ধন‌্যবাদ জানিয়েছেন; নির্বাচনী কাজে সহায়তার জন‌্য আমরাও তাকে ধন‌্যবাদ জানিয়েছি।”

সাহসের সঙ্গে কাজ করায় প্রধানমন্ত্রীও বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের সদস‌্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান।

বিদায়ের আগে ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে বিদায়ী ইসি। বিকালে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন তারা।  

৮ ফেব্রুয়ারি সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ও তিন নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে, আরেকজন নির্বাচন কমিশনারের মেয়াদ পূর্ণ হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।