নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশমুখী রোহিঙ্গা স্রোত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মধ্যে শান্তিতে নোবেলজয়ী মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির বিশেষ দূত হিসেবে ঢাকা এসেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী উ চ থিন।
বুধবার বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমার থেকে তাদের যেসব ন্যাশনাল বাংলাদেশে মাইগ্রেট করেছে তাদেরকে ফেরৎ নিতে হবে।”
দীর্ঘদিন ধরে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বহন করা আসছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে মাস তিনেক আগে রাখাইনে সেনা দমন অভিযানের মুখে নতুন করে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গা। এই দফায় ইতোমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে সরকারের ভাষ্য।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্কে বাংলাদেশের গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে প্রয়োজনীয় সব কিছু করার আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা মিয়ানমার ‘শেয়ার’ করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী যে কোনো দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড চালাতে না দেওয়ার বিষয়েও সরকারের কঠোর অবস্থান জানান তিনি।
গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পরই এবার রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়।
অং সান সু চির একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন উ চ থিন।
সু চির দূত বলেন, “মিয়ানমার দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করতে চায়।”
দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।
দূতের মাধ্যমে অং সান সু চিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সুরাইয়া বেগম, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।