সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, বুধবার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনি এই আবেদন জমা দেন।
তিনি জানান, সংবিধানের বিধান অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইন তৈরির নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে ওই আবেদনে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ইউনুছ আলী বলেন, “সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশন গঠন ও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সংবিধান ও আইনের অধীনে পরিচালিত হওয়ার কথা বলা থাকলেও এখন পর্যন্ত আইন প্রণয়ন করা হয়নি। একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সংবিধানের বিধানের বাইরে চলতে পারে না।”
সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে এবং এ বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেবেন।
১১৮ (৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন এবং কেবল এই সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন।
১১৮ (৫) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোনো আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনারদের কাজের শর্ত রাষ্ট্রপতি আদেশের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেবেন। তবে শর্ত হল, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে যে পদ্ধতি ও কারণে অপসারণ করা যায়, তেমন পদ্ধতি ও কারণ ছাড়া কোনো নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করা যাবে না।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আইন সচিব ও বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে এই রিটে বিবাদী করেছেন ইউনুছ আলী।
আগামী সপ্তাহে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন শুনানি জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিদায় নিচ্ছে। সংবিধান অনুযায়ী ইসি গঠনের আইন প্রণীত না হওয়ায় গতবারের মত এবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
এ পর্যন্ত বঙ্গভবানের সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয়পার্টিসহ কয়েকটি দল চলতি সংসদেই ইসি গঠনের বিল তোলার প্রস্তাব করেছে।
অন্যদিকে বিএনপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ বর্তমান সংসদকে ‘জনপ্রতিনিধিত্বহীন’ আখ্যায়িত করে ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।