মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত মেজর সাজ্জাদুল কবির কলাবাগান থানায় মামলাটি করেন।
এর পরপরই কল্যাণকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানিয়েছেন। কল্যাণকে আগেই থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।
সোমবার মধ্যরাতে পান্থপথে বসুন্ধরা সিটির সামনে আহত জিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কল্যাণও হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, “জিয়াকে ধাক্কা দেওয়ার পরে গাড়িটি লাইট বন্ধ করে কিছুক্ষণ থেমে ছিল। পরে এটি চলে যায়। জিয়াকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করানোর পর কল্যাণ রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালে যান।
“তিনি সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, তার গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। তারপর লাপাত্তা হয়ে যান তিনি।”
“এই ঘটনায় মামলায় অভিযোগ পাওয়ার ভিত্তিতে কল্যাণ কোরাইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে,” বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন মারুফ সরদার।
সন্ধ্যায় অভিনেতা কল্যাণ ফেইসবুকে “আই এম ইনোসেন্ট” স্ট্যাটাস দিলে তা অনেকের নজরে পড়ে। পুলিশও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় ডেকে নেয়।
তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, সোমবার মধ্যরাতে তার গাড়িও দুর্ঘটনায় পড়েছিল। তবে তা ঘটেছে তেজগাঁও থানার কাছে, যার সঙ্গে জিয়ার দুর্ঘটনার সম্পর্ক নেই।
ওই লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে কল্যাণ প্রথমে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাই, বহু ঝামেলায় আছি, পরে কথা বলি। কথা বলার পারমিশন নাই এখন।”
কল্যাণ দাবি করেন, তার গাড়ির দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি গেছি আমার রোগী নিয়ে হাসপাতালে, আর উনারা গেছে উনাকে (জিয়া) নিয়ে।”
কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে- জানতে চাইলে কল্যাণ বলেন, “আমারটি (তার গাড়ি দুর্ঘটনা) তেজগাঁও থানার এখানে হয়েছে। আর উনার (জিয়) ঘটনাটি অন্য জায়গায়। দুটি আলাদা ঘটনা।”
‘আই এম ইননোসেন্ট’ স্ট্যাটাস কেন দিয়েছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার ঘটনাটি নিয়ে দিয়েছি। আচ্ছা ভুল হয়েছে, তা তুলে নিচ্ছি।”
তখন পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “কল্যাণ কোরাইয়া স্বীকার করছে না। সে (কল্যাণ) বলছে, তার গাড়ির দুর্ঘটনাটি তেজগাঁও থানার কাছে হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।”
কলাবাগান থানার ওসি মো. আরাফাত হোসেন বলেন, তারা কল্যাণকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
জিয়াকে মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রথম আলোর অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক কমল জোহা খান রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জিয়ার ডান পা ভেঙে গেছে। বুকে প্রচণ্ড আঘাত রয়েছে। মাথায়ও আঘাত পেয়েছেন।
“চার ঘণ্টার একটি অপারেশন হয়েছে তার। এরপর এখনও তার জ্ঞান ফেরেনি।”