বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, “শিক্ষা খাতে বরাদ্দ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমি বলব, প্রতি বছর আমরা আমাদের টার্গেট ফুলফিল করতে যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুই বরাদ্দ করার চেষ্টা করি।”
‘বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে নীতিগত অগ্রাধিকার’ শীর্ষক এই সেমিনার যৌথভাবে আয়োজন করে ব্র্যাক ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা কোপেনহেগেন কনসেনসাস সেন্টার।
মূলত বাংলাদেশ সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে সুপারিশমালা তুলে ধরতে সেমিনারটির আয়োজন করা হয়।
এতে বাংলাদেশ দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে মন্তব্য করে মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের সব মানুষের এখন প্রত্যাশা যে, একুশ সালটা কেমন হবে দেখেই যেন মারা যাই। আমাদের দেশ এখন এমন ভাবে আগাচ্ছে, সবাই মনে করছে যে আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে আরও নতুন কোন ইনোভেশন হয়ত দেখতে পাওয়া যাবে।”
মন্ত্রী বলেন, “আপনারা আরও বেশি গবেষণা করেন। দেশের সমস্যাগুলো আর তার সমাধান সামনে নিয়ে আসেন। আমাদের নিজেদেরও যদি কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি থাকে, তা নিয়েও কাজ করেন। ”
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রাব্বানি।
‘দক্ষতা গঠনে স্বীকৃতি’ শিরোনামের এই প্রবন্ধে বলা হয়, বিনিয়োগ হিসেবে শিক্ষা সবচেয়ে লাভজনক খাত হলেও এ খাতে প্রত্যাশা অনুযায়ী বাজেট বরাদ্দ হচ্ছে না।
অধ্যাপক রাব্বানি তার গবেষণার বরাত দিয়ে জানান, শিক্ষাখাতে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশে সঠিকভাবে এক টাকা বিনিয়োগ করলে তার বিপরীতে ১৯ গুণ সুফল মিলবে।
সেমিনারে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহসানুজ্জামান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এসএম হাফিজুর রহমান আরও দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় বক্তারা যেসব চ্যালেঞ্জের কথা বলেন তার মধ্যে গুণগত শিক্ষার অভাব, প্রাথমিক পর্যায়ের পর মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পরার হার বৃদ্ধি, শিশুদের মেধাভিত্তিক ভাগ না করে শিক্ষা দেওয়া, শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি, শিক্ষক স্বল্পতা, শিক্ষকদের জবাবদিহিতা কম থাকা ইত্যাদি রয়েছে।
সেমিনারে অতিথি হিসেবে অন্যদের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্যা চিলড্রেনের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক তালাত মাহমুদ, ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল বায়েস এবং ব্র্যাক এডুকেশন প্রোগ্রামের পরিচালক শফিকুল ইসলাম।