অন্য বছরগুলোতে এই এমন সময়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়; বাতাসে তাপমাত্রা নামে ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
কিন্তু এবার রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রংপুর-রাজশাহীর অন্য সব এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে।
ডিসেম্বরের শেষার্ধে উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের (১০ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। কিন্তু তা আসেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শীতকাল যথাসময়ে এসেছে, তবে তীব্রতা তেমন হয়নি স্থানীয় কিছু কারণে।”
তিন কারণে এবার ডিসেম্বর মাসে শীত কম অনুভূত হয়েছে বলে জানান তিনি।
“এ সময়ে সাইবেরীয় উচ্চ চাপ বলয় ও উত্তর-পশ্চিমা শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ (জেড বায়ু)-এর দুর্বলতা এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘নাদা’র কারণে শীতের তীব্রতা নেই।”
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মৌসুম ধরা হয়। গতবছরের তুলনায় এবার এই মৌসুমে এই পর্যন্ত গড় তাপমাত্রাও বেশি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পরিচালক জানান, তিনটি ‘ফ্যাক্টর’ সক্রিয় থাকায় এবছর ডিসেম্বরে আগের বছরের তুলনায় গড় তাপমাত্রা ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ডিসেম্বরের শুরুতে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহও হয়েছে স্বল্প সময়ের জন্য। কিন্তু তা দীর্ঘায়িত হয়নি।
জানুয়ারিতে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে বলে জানান সামছুদ্দিন।
আবহাওয়ার তিন মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এসময় এসব অঞ্চলে ১ থেকে দুটি মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ ও অন্যত্র মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
সামগ্রিকভাবে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছর মাঘ মাসের (২০ জানুয়ারি) শুরুতে বৃষ্টিও ছিল। এসময় শীতের তীব্রতাও ছিল বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, “তিন মাসের পূর্বাভাসের চেয়ে এক মাসের পূর্বাভাস আরও বেশি সঠিক ও কার্যকর হবে। সোমবার জানুয়ারি মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে বিশেষজ্ঞ কমিটি বসবে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সব পর্যালোচনা করে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস দেওয়া হবে।”
‘অ্যাপ’ ব্যবহারের আহ্বান
যে কোনো জায়গা থেকে দেশের আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য জানতে ‘বিএমডি ওয়েদার অ্যাপ’ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করতে গুগল প্লে স্টোরের সার্চ বক্সে BMD Weather App লিখলে বাংলাদেশের এই আবহাওয়া অ্যাপটি পাওয়া যাবে। এরপর অ্যাপাটি ইন্সটল করে নিতে হবে। অ্যানরয়েড ফোন ব্যবহারকারীরা গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
ডপলার রাডার এবং আবহাওয়া স্যাটেলাইটের সর্বশেষ তথ্য তিতে দেশের ৪২টি স্থানে স্থাপিত স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া যন্ত্রের সঙ্গে এই অ্যাপটি সরাসরি সংযুক্ত।