নতুন ভোটারদের চাওয়া নিরাপত্তা, উন্নয়ন

নাগরিকদের নিরাপদ ও উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে পারবেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে এমন নেতৃত্ব দেখতে চান নতুন ভোটাররা। জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে এসে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশে সন্তুষ্টও তারা।

সুলাইমান নিলয় নারায়ণগঞ্জ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2016, 08:27 AM
Updated : 22 Dec 2016, 08:37 AM

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে নতুন ভোটাররা খোলাখুলিভাবে জানিয়েছেন তাদের প্রত‌্যাশার কথা। 

বছর দেড়েক আগে ভোটার হয়েছেন দিনমজুর জয়নাল আবেদীন আল আমিন। সিদ্ধিরগঞ্জের মার্কেটপাড়ার বাসিন্দা জয়নালের তিন বছরের একটা সন্তান রয়েছে।

নিজে চতুর্থ শ্রেণী পর‌্যন্ত পড়াশেনা করলেও সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চান। ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সন্তানের জন্য একটা সুন্দর ভবিষ্যতের চিন্তা তার অগ্রাধিকারে।

ভোট কেমন হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে জানালেন ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে জেনেই একটু দেরিতে কেন্দ্রে এসেছেন।

“সকালে মনে করেছিলাম, যদি কোনো ক্যাচাল-কুচাল (গোলযোগ) লাগে, এই লেইগা একটু দেরি করে আসছি। আল্লাহর রহমতে কোনো ক্যাচাল হয় নাই। ভালো আছে। ক্যাচাল হইলে আমরা সাধারণ মানুষ কী করমু। আমরাতো আর তখন আসতে পারতাম না।”

সিটি করপোরেশনে কেমন নেতৃত্ব চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি একজন ভালো জননেতা চাই, যিনি কাজ করবেন; যে এলাকার সৌন্দর‌্য বুঝবে, মানুষের ভালো চাইবে।”

একজন জনপ্রতিনিধি চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে মন্তব‌্য করে জয়নাল বলেন, “এমন নেতা আসুক, যে চাইবে, ভবিষ্যতের বাংলাদেশ যেন সুন্দর হোক, আমার ছেলে যেন একটা ভালো স্কুলে পড়ালেখা করতে পারে। ভালো শিক্ষা নিতে পারে, ভালো জায়গায় যেন যেতে পারে। ওই আশা কইরা কেন্দ্রে আসছি, যেন একটা ভালো লোক পাস করে।”

নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে পারবেন, এমন জনপ্রতিনিধি দেখতে আগ্রহী এই নতুন ভোটাররা।

আদমজীর একটি কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাস করা সাইফুল ইসলাম আনন্দ জানান, কিছুদিন আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তিনি ভোটার হয়েছেন।

ভোট দেওয়ার প্রথম অনুভূতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “মনে হচ্ছে, আমি এখন দেশের নাগরিক হয়েছি। এতদিন এই অনুভূতিটা মিসিং মিসিং লাগছে। এখন ভালো লাগছে।

“জনপ্রতিনিধির কাছে আমার চাওয়া হচ্ছে, এলাকার উন্নতি, সুষ্ঠুভাবে যাতে সব কিছু পরিচালনা করে। সবাই চাওয়ামত শিক্ষা পায়, কাজ পায়।”

নগরীর মণ্ডলপাড়ার গৃহিণী আয়শা সিদ্দিকা বিয়ের পরও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ কলেজে বিএ পড়ছেন তিনি।

ভোটের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এবারই প্রথম ভোট দিচ্ছি, ২০১২ সালে ভোটার হয়েছি। প্রথমবার যেহেতু ভোট দিতে আসছি। তাই ভালো লাগছে।”

“সবাই যা চায়, সেটাই চাই। উন্নয়ন চাই, দেশে শান্তি থাকুক,” নির্বাচিত হতে যাওয়া জনপ্রতিনিধিদের কাছে এমনই প্রত‌্যাশা তার।

“জনপ্রতিনিধি শান্তি ও উন্নয়নে অনেক কিছু করতে পারে। সন্ত্রাসমুক্ত করতে পারে, ধুমপান ও মাদক মুক্ত করতে পারে। জনগণের বিচার আচার ঠিকমত করতে পারে। জনগণের ভালো মন্দ দেখতে হবে। তারা সুখ-বিপদ দেখতে হবে।”

এইচএসসি পাসের পর বিয়ে করে গৃহিণী হয়ে যাওয়া আফসানা আক্তার বলেন, “প্রথমবার ভোট দিতে এসে অনেক ভালো লাগছে। দেশের নাগরিক হিসাবে প্রত্যেকটা মানুষকে ভোট দেওয়া উচিত।

“আমি চাই, পুরা বাংলাদেশে জনপ্রতিনিধিরা সন্ত্রাস-জঙ্গী-রাহাজানি-গুম-হত্যা এগুলো যাতে দূর হয়। একজন জনপ্রতিনিধি চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। বিষয়টা উনার ওপরই নির্ভর করে। উনি সঠিক হয়ে থাকলে ভালো কাজ করবে, আর উনার মধ্যে ভেজাল থাকলে ভালো কাজ করবে না। তার মধ্যে দুর্নীতি থাকলে দুর্নীতির পেছনে দৌঁড়াইব। নিজের লাভ বিছরাইব (খুঁজবে), জনগণের লাভ বিছরাইব না।”