নিজেই শুনানি করে মামলায় স্থগিতাদেশ পেলেন মওদুদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2016, 12:53 PM
Updated : 11 Dec 2016, 05:58 AM

সাবেক এই আইনমন্ত্রীর আবেদনে বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।

ব‌্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ নিজেই আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তাজরুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, হাই কোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে।

মওদুদের সহকর্মী আইনজীবীরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সালিশি আদালতে পেট্রোবাংলা, বাপেক্সের সঙ্গে নাইকোর চুক্তি ও দুর্নীতি সংক্রান্ত বিরোধের মামলা চলছে। চলতি বছরের ১৯ জুলাই এক আদেশে ওই সালিশি আদালত এক আদেশে বাপেক্স-পেট্রেবাংলাকে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নাইকো দুর্নীতি মামলার কার‌্যক্রম স্থগিত রাখতে বলে।

সালিশি আদালতে একটি মামলা চলমান থাকায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার আবেদন করেন মওদুদ। তবে বিচারিক আদালত চলতি বছরের ১৬ অগাস্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।

তার বিরুদ্ধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনে ওয়াশিংটনের সালিশি আদালতের আদেশের কপি তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

এই আবেদনের শুনানি নিয়েই হাই কোর্ট মওদুদের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে।

একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে তার আবেদন খারিজ করে দেওয়ার আদেশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।

চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুদককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নাইকো মামলায় এই স্থগিতাদেশ শুধু মওদুদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

এই মামলায় মওদুদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও আসামি।

এই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা খালেদার রিট আবেদন খারিজ করেছিল হাই কোর্ট। তার বিরুদ্ধে তিনি আপিল বিভাগে গেলে গত ২৪ নভেম্বর তাও খারিজ হয়ে যায়।

ফলে খালেদার বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে এই মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মামলাটিতে অন‌্য আসামিরা হলেন সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্স্’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।

২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।