বিয়ের বয়স ১৮ তে কোনো শর্ত ‘চাই না’

মেয়েদের বিয়ের ন‌্যূনতম বয়স ১৮ বছর শর্তহীনভাবে রাখার দাবি জানিয়েছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। তা না হলে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2016, 12:29 PM
Updated : 1 Dec 2016, 12:29 PM

শর্তসাপেক্ষে শিথিলের সুযোগ রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন- ২০১৬’ এর খসড়ায় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।

৬৯টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের এই ফোরাম কোনোভাবেই মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স না কমানোর দাবি জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, “নারীর মানবাধিকার সম্পর্কে দেশের নীতি-নির্ধারকদের সঠিক ধারণা আছে কি না, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান।

“এমন কোনো সমীকরণ, স্ট্রাটেজি তৈরি করা উচিৎ নয়, যা দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়।”

গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “সরকারের চেতনা উজ্জীবিত করতে হবে। নারীর অগ্রযাত্রার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া খুবই প্রয়োজন। এ অবস্থায় এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন গড়ে তুলব।”

মধ্যে গত ২৪ নভেম্বর মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত প্রস্তাবিত আইনে বিয়ের জন্য আগের মতোই মেয়েদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর বয়স হওয়ার শর্ত রাখা হলেও ‘বিশেষ প্রেক্ষাপটে’ আদালতের নির্দেশনা নিয়ে এবং বাবা-মায়ের সমর্থনে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরও বিয়ের সুযোগ রাখা হয়।

এই ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ এর ফলে আইনের অপব্যবহার হবে বলে মনে করেন সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির নেতারা। তারা বলছেন, এতে শিশু বিবাহকে বৈধতা দেওয়া হবে। ফলে নারীর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাবে এবং মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার বাড়বে।

তাছাড়া এই বিধানের সুযোগ নিয়ে নারী নির্যাতনকারীরা অপরাধের শাস্তি থেকে রেহাই পেয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা তাদের।

এই আইন প্রণয়নের উদ‌্যোগের পর তা না করতে নারী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছিল।

তখন সরকারের কর্তাব‌্যক্তিরা আশ্বাস দিলেও আইনের প্রস্তাবে ‘বিশেষ প্রেক্ষাপট’ এর উল্লেখ দেখে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি ‘বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন’ হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক রওশন জাহান পারভীন, স্টেপস টুওয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির, ওয়াইডব্লিউসিএ অব বাংলাদেশের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক হেলেন মনীষা সরকার, দিপ্ত ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জাকিয়া কে হাসান এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশনের চঞ্চনা চাকমা।