লিভ টু আপিল খারিজ, খালেদার নাইকো দুর্নীতি মামলা চলবে

নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন আপিল বিভাগেও সাড়া পায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2016, 03:57 AM
Updated : 24 Nov 2016, 11:19 AM

মামলা বাতিলের আবেদন হাই কোর্ট খারিজ করে দেওয়ায় সর্বোচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল নিয়ে এসেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা। 

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার খালেদার ওই আবেদনও খারিজ করে দেয়।

জরুরি অবস্থার সময় দুদকের দায়ের করা এ মামলাটি বর্তমানে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

আপিল বিভাগ খালেদার লিভ টু আপিল খারিজ করে দেওয়ায় এ মামলার বিচার চালিয়ে নিতে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

আদেশের পর খালেদার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, “আবেদন খারিজ হয়ে গেলেও এ মামলায় আমরা জিতব। কারণ নাইকো গ্যাস ফিল্ডের ইজারা নিয়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছিল। উনারটা হাই কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে, কিন্তু খালেদা জিয়ারটা রয়ে গেছে।” 

এই আইনজীবী বলেন, “আমরা সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিলাম যদি অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে শেখ হাসিনা এই মামলার মূল আসামি, খালেদা জিয়া উনার সহযোগী।”

রিভিউ করবেন কি না জানতে চাইলে খোকন বলেন, রায় হাতে পেলে আলোচনা করে তারা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

পরের বছর ৫ মে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোপত্রে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।

এর বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে এই মামলা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে দেওয়া হয় রুল। ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা।

গত বছরের শুরুতে রুল শুনানির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে গত বছরের ১৮ জুন রায় দেয় হাই কোর্ট।

খালেদার করা আবেদন খারিজ করে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয় ওই রায়ে। সেই সঙ্গে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের ৩০ নভেম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা। বিচারক এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেন।

এদিকে হাই কোর্টের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পর গত বছর নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিভ টু আপিল করেন খালেদা। ওই আবেদনের ওপর রবি ও সোমবার শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার আদেশ দিল।