নিম্ন আদালত বদিকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডের সঙ্গে ১০ লাখ টাকার যে অর্থদণ্ড দিয়েছিল, তাও হাই কোর্ট স্থগিত করেছে।
বদির আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দেয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় গত ২ নভেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত বদিকে ৩ বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। জরিমানার অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে তাকে আরও তিন মাস কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে জানানো হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার হাই কোর্টে আপিল করেন বদি। তার আইনজীবীরা বুধবার আপিল আবেদন আদালতে উপস্থাপনের সময় জামিন ও অর্থদণ্ড মওকুফের আবেদন করেন।
বদির পক্ষে শুনানি করেন হবিগঞ্জের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী। তার সঙ্গে ছিলেন নাসরিন সিদ্দিকা লীনা। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
নাসরিন সিদ্দিকা লীনা আদেশের পর বলেন, “শুনানিতে আমরা বলেছি, এর আগেও তিনি (বদি) আদালতের কাজে কোনো অশ্রদ্ধা দেখাননি। জামিন পেলেও তিনি আইন মেনে চলবেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন।”
নিম্ন আদালতে রায়ের পর থেকে কারাগারে থাকা বদির মুক্তিতে এখন আর কোনো বাধা নেই বলে তার আইনজীবীর ভাষ্য।
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “আমরা জামিনের আবেদনের বিরুদ্ধে আপত্তি করেছিলাম। আদালত বলেছেন, এটা স্বল্পমেয়াদী সাজা, এক্ষেত্রে জামিনের ব্যাপারে আপিল বিভাগের রায় আছে।
“আমরা বলেছি, উনাকে একটা অভিযোগে খালাস দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে আপিল করব। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন ও আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। সেই সঙ্গে দুদককে দ্রুত আপিল শুনানি করতে বলেছেন।”
জামিন পেলেও দণ্ডিত বদির সংসদ সদস্য পদ আর নেই বলে মন্তব্য করেন খুরশীদ আলম খান।
তিনি বলেন, “সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বদি সাহেব আর সংসদ সদস্য নেই। কারণ উনার জরিমানা স্থগিত হয়েছে, সাজা স্থগিত হয়নি। তাই সাজা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না উনি সংসদ সদস্য আছেন।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান ২০১৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার রমনা থানায় সাংসদ বদীর বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। তদন্ত শেষে দুদকের উপ-পরিচালক মঞ্জিল মোর্শেদ ২০১৫ সালের ৭ মে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযোগপত্রে বদির ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৯৪২ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়। বলা হয়, তিনি দুদকের কাছে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ২৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
রায়ে অতিরিক্ত সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ থেকে আদালত বদিকে খালাস দিলেও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাজার আদেশ দেয়।
ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য হয়ে দুর্নীতির মামলার সাজা হওয়া বাংলাদেশে বিরল।