অতীতে তাকিয়ে এগিয়ে নিতে হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি: রাষ্ট্রপতি

বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য এগিয়ে নিতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2016, 02:02 PM
Updated : 13 Nov 2016, 02:17 PM

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশ আবহমানকাল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সম্প্রীতির সেই ঐতিহ্যকে ধারণ করে তোমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস জানতে হবে। জানতে হবে আমাদের অতীতকে, যেখানে প্রোথিত আছে বাঙালির শেকড়।”

রোববার টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি।

সাম্প্রতিক সময়ে কিছু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ায় জাতির মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে মন্তব্য করে আবদুল হামিদ বলেন, “তোমাদের কর্মস্পৃহা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সত্য জয়ের স্বপ্ন যদি মুখ্য হয়ে উঠে তবে কোনো তরুণকে আর সাম্প্রদায়িকতার স্বপ্ন বিভোর করবে না বলেই আমার বিশ্বাস।

“সম্প্রতি কিছু বিপথগামী তরুণের পাশাপাশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া গুটি কয়েক ছাত্র ও শিক্ষকের জঙ্গি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার খবর বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, গোটা জাতির মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করেছে। উঠতি মেধাবী তরুণদের যারা উগ্র মৌলবাদ, সন্ত্রাসী বা জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার মদদ দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে সমূলে উৎপাটন করতে হবে।”

জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিও আহ্বান জানান দেশে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ।

“বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কঠোর নিয়মানুবর্তিতা, নিয়মিত পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশসহ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতি গঠনে অবদান রাখতে হবে।”

শিক্ষার্থীদের দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, “তোমরা আজ গ্র্যাজুয়েট, দেশের মূল্যবান মানবসম্পদ। তাই পরিবার, সমাজ, দেশ-জাতি ও বিশ্বমানবতার প্রতি তোমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল।

“তোমাদের এ অর্জনের পেছনে সমাজের শ্রমিক-কৃষক-আপামর জনসাধারণের অবদানও কিন্তু কম নয়। তাই তাদের প্রতিও তোমাদের দায়বদ্ধতা আছে। তোমরা তাদের কাছে একান্তভাবেই ঋণী। তোমাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও মনন দিয়ে দেশমাতৃকার কল্যাণ করতে পারলে সে ঋণ কিছুটা হলেও শোধ হবে।”

সমাবর্তনে এক হাজার ৪৮৬ জন শিক্ষার্থীকে সনদ দেওয়া হয়। কৃতিত্বপূর্ণ ফলের জন্য ৪৩ জনকে দেওয়া হয় সন্মাননা।

সমাবর্তনে অন্যদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলাউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বক্তব্য দেন।

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন।

এর আগে সকালে হেলিকপ্টারে করে টাঙ্গাইল পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। বিকালে ঢাকা ফেরেন তিনি।

সকালে টাঙ্গাইলে পৌঁছে টাঙ্গাইল জেলা বার সমিতির ১২৫ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেন আবদুল হামিদ। পরে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারত করেন তিনি।