বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি রোধ করার জন্যই তারা এমনটি করছে বলে মনে করেন তিনি।
শনিবার রাতে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমরা এনালাইসিস করে দেখলাম, আপনি ফেইসবুকে গেলেই দেখবেন কোনো না কোনো ভাবে তারা (জামায়াত) এটার সাথে যুক্ত।”
“যারা (রামপাল নির্মাণে) নিবৃত করছেন, তারা অধিকাংশই জামায়াত সংশ্লিষ্ট। বাংলাদেশে উন্নয়নের যে গতি এসেছে, যেভাবে হোক এটা (তাদের) থামাতে হবে! ”
শেখ হাসিনার হাত দিয়ে বাংলাদেশ কখনই যেন বিশ্বে সবার ওপরে না দাঁড়াতে পারে সেজন্যই জামায়াত সংশ্লিষ্টরা এ কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন বিপু।
রাজধানীর লেক ক্যাসেল হোটেলে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, পরিবেশ ও প্রতিবেশ এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রর ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে সুচিন্তা ফাউন্ডেশন।
এতে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিপু বলেন, “যারা এ বিদ্যুৎকেন্দ্রর বিরোধিতা করছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন এ বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে ক্ষতি হবে কী- হবে না।”
ঢাকা শহরের আশেপাশে সাড়ে ৪০০ ইটভাটা রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “এগুলোতে অতি নিম্নমানের কয়লা পোড়ানো হয়। এসব কয়লায় প্রায় ১০ শতাংশ সালফার তৈরি হয়।
“এসব ব্রিকফিল্ড থেকে যে সালফার বের হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে তার এক হাজার ভাগের এক ভাগও যদি হত- তাও আমি বলতাম…।”
রামপালবিরোধীদের দিকে ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তারা যে হিসাব দেয়, সে হিসাবে ঢাকা শহরে কোনো মানুষ বসবাস করতে পারত না; চিড়িয়াখানার সব প্রাণী মারা যেত।”
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভায় বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশেষজ্ঞ ও অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ ইউনিভার্সিটির প্রজেক্ট অফিসার সালেক সূফি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, “রামপালের চিমনি হবে ২৭০ মিটার উচ্চতার। আর এ প্রকল্প আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির হওয়ায় এমনিতেই তেমন একটা ধোঁয়া দেখা যাবে না। যে একটা চিমনি থেকে ধোঁয়া বের হবে, তাতে একটা বন ধ্বংস করবে বলে যে দাবি- তা অজ্ঞতা।
“রামপালে মাত্র শুন্য দশমিক ৬ শতাংশ সালফারের কয়লা ব্যবহার করতে হবে।”
সালেক সূফি বলেন, “আমি পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে ক্রিটিক্যাল ও সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দেখেছি। রামপাল হবে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল। তাই এটাতে পৃথিবীর অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে কম ক্ষতি হব।”
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভারতীয় নিম্নমানের কয়লা পোড়ানো হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা বা থাইল্যান্ড থেকে উন্নত মানের কয়লা ব্যবহার করতে হবে। কারণ নিম্নমানের কয়লা দিয়ে এর বয়লার ঘুরবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রে এখনও ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসে বলে জানান মোনাশ ইউনিভার্সিটির এই প্রকল্প কর্মকর্তা।
সভায় অন্যদের মধ্যে ড. এজাজ আহমেদ, ড. আনসারুল করিম, প্রকৌশলী বায়েজিদ কবির ও ড. আঞ্জুমান ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।