১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়ার ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের এই গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
মঙ্গলবার সৈয়দ হকের মৃত্যুর পর শোকগ্রস্ত গায়ক এন্ড্রু কিশোর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি নরমালই যেভাবে গান গাই, সেভাবে গানটি গেয়ে এসেছিলাম, তখন ভাবিনি গানটি এত বিখ্যাত হবে।”
এই গানটির জন্য ওই বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন জনপ্রিয় এই সঙ্গীতশিল্পী। গানটির সুরকার আলম খানও পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন সৈয়দ হক। আলম খানও ফুসফুসের ক্যান্সার নিয়ে এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে শয্যাশায়ী।
তিন যুগ আগে গানটির সুরোরোপের স্মৃতি কিছু দিন আগে একটি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছিলেন আলম খান।
তিনি বলেন, “আমি তাকে হক ভাই বলি। তো... একদিন হক ভাই আসলেন আমাকে ছবির গল্প শোনানোর জন্য। গল্পের কাহিনী শোনানোর পর ছোট একটা চিরকূট.. ৪ ইঞ্চি বাই ৬ ইঞ্চি হবে.. দিয়ে বললেন – চারটা লাইন আছে, সুর করে দেন।
“আমি চিরকূটটা দেখে বললাম- সিচুয়েশনটা কী? তিনি বললেন- পড়েন.. পড়লাম, দেখলাম ‘ঠুস’ একটা নতুন শব্দ। আমি বললাম- সুর করতে পারব? তিনি বললেন- আপনি চেষ্টা করলে পারবেন।”
“এর মধ্যে ভাবলাম দ্বিতীয় অন্তরাটা - পূর্ণিমাতে ভাইসা গেছে- ভাবলাম এইটা নিয়ে একটু চিন্তা করে নেই...প্রথমে আটকে ছিলাম। তারপর সাডেন সুর আসল।”
‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রটির কাহিনীকার ও সংলাপ রচয়িতাও ছিলেন সৈয়দ হক। শ্রেষ্ঠ সংলাপের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রটির নির্মাতা মো. মহিউদ্দিনও পান পুরস্কার।
এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজ্জাক ও প্রবীর মিত্রও সেবার জিতেছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
সাহিত্যের নানা অঙ্গনে সদর্প উপস্থিতির পাশাপাশি তখন চলচ্চিত্রে নিয়মিত সংলাপ, গান লিখতেন সৈয়দ হক।
‘তোরা দেখ দেখ দেখরে চাহিয়া’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা’র মতো তার লেখা বহু গান এখনও মানুষের মুখে ফেরে।
গত শতকের ৮০-এর দশকে সৈয়দ হকরা দূরে সরে গেলে ঢাকার চলচ্চিত্র জগতে দুঃসময় নেমে আসে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।