খুনিদের ফেরাতে সচেষ্ট হতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র যাতে ফেরত পাঠায়, সেজন‌্য জনমত গঠন করতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ‌্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2016, 05:53 PM
Updated : 18 Sept 2016, 06:01 PM

শনিবার রাতে মন্ট্রিয়ালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব‌্যে তিনি এই আহ্বান জানান বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

কানাডা সফরে একদিন আগেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকে জাতির জনক হত‌্যাকাণ্ডে মৃত‌্যুদণ্ডে দণ্ডিত এ এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে ফেরতের বিষয়ে আলোচনা করেন শেখ হাসিনা।

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলতে ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল মৃ‌ত‌্যুদণ্ডবিরোধী কানাডা। তবে বঙ্গবন্ধুকন‌্যার এই সফরে অটোয়ার সুর নরম হওয়ার প্রকাশ ঘটেছে।

কোন প্রক্রিয়ায় নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানো হবে, তা খুঁজতে একমত হয়েছে কানাডা সরকার।

অন‌্যদিকে বঙ্গবন্ধু হত‌্যাকাণ্ডে মৃত‌্যুদণ্ডে দণ্ডিত আরেক খুনি রাশেদ চৌধুরী রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। কানাডা সফর শেষে জাতি সংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে দেশটিতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। 

কানাডার অনুষ্ঠানে তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, “কীভাবে একটি সভ্য দেশ অভিযুক্ত খুনিকে আশ্রয় দিতে পারে।
“আমি আপনাদের সামনে এই দাবি রেখে যাচ্ছি, যে দেশে আপনারা বসবাস করছেন, সেই দেশের জনপ্রতিনিধিদের চিঠি লিখুন এবং এই চেতনাজাগ্রত করুন- কেন এসব দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমামনের হত্যাকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “যতদূর আমরা জানি বঙ্গবন্ধুর এক খুনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছে। একজন কানাডায়, দুজন পাকিস্তানে এবং অন‌্য দুজন কোথায় আছে সন্ধান পাওয়া যায়নি, আমরা তাদের আটকের জন্য খুঁজছি।”

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার এগিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

সন্তানরা যাতে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ে, সে দিকে দৃষ্টি রাখতেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান বলে প্রেস সচিব জানান।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার অন‌্য হোতা তামিম চৌধুরী এই কানাডায়ই বেড়ে উঠেছিলেন। সম্প্রতি ঢাকায় পুলিশের এক অভিযানে নিহত হন নব‌্য জেএমবির এই নেতা।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আপনাদের সন্তানদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে বলব। তারা কী করে, কোথায় যায় এবং তারা কাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশছে- এই দায়িত্ব অভিভাবক, শিক্ষক ও ইমাম সকলের।”

তিনি বলেন, “যারা গুলশানে হামলা চালিয়েছে তারা কানাডা, মালয়েশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া এবং অন্যত্র পড়াশোনা করেছে। সবাই আশা করে যারা বিদেশে পড়াশোনা করছে তারা উদার মনের হবে। এখন মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে কীভাবে তারা চরমপন্থায় এবং ইসলামের অপব্যাখ্যার সঙ্গে যুক্ত হল।”

গুলশান হামলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি জঙ্গি দমনে সরকারের তৎপরতার বিষয়টি প্রবাসীদের সামনে তুলে ধরেন সরকার প্রধান।
সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার জন‌্য বিএনপি-জামায়াত জোটকে দায়ী করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কানাডা শাখা আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকও ছিলেন।

আওয়ামী লীগ কানাডা শাখার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ মাহমুদ মিয়া এতে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান প্রিন্স অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।