নূর চৌধুরীকে ফেরতের উপায় খুঁজতে রাজি কানাডা

বঙ্গবন্ধুর খুনি এ এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে কোন প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানো যায়, বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তার উপায় বের করতে রাজি হয়েছে কানাডা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2016, 08:40 AM
Updated : 18 Sept 2016, 07:14 AM

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলতে ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল মৃ‌ত‌্যুদণ্ডবিরোধী কানাডা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বৈঠকে দৃশ‌্যত অটোয়ার সুর নরম হওয়ার প্রকাশ ঘটেছে।

শুক্রবার মন্ট্রিয়ালে ‘ফিফথ রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ)’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ফাঁকে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।

ওই বৈঠকের আগেই কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত পিয়েরে ট্রুডোকে বাংলাদেশের দেওয়া মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা তার ছেলে জাস্টিনের হাতে তুলে দেন শেখ হাসিনা।

এরপর অনুষ্ঠিত বৈঠকেই বাংলাদেশের আদালতে দণ্ডিত নূর চৌধুরীকে ফেরতের উপায় বের করতে মতৈক‌্য হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করীম।

তিনি বলেন, এখন দুই দেশের কর্মকর্তারা বৈঠক করে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় কার্যকরের জন্য নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার উপায় বের করবেন।

পঁচাত্তরের পর পালিয়ে যাওয়া নূর চৌধুরী কানাডার টরন্টোতে রয়েছেন।

তিনিসহ ছয়জন বাংলাদেশের জাতির জনক হত‌্যাকাণ্ডে মৃত‌্যুদণ্ডের রায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন। তাদের ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের দাবি রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষ থেকে প্রচেষ্টা চালানোর কথাও বলা হচ্ছে।  

এ এইচ এম বি নূর চৌধুরী

 

নূর চৌধুরী ছাড়া পলাতক অন‌্যরা হলেন- আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, আব্দুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।

বঙ্গবন্ধু হত‌্যামামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি কার্যকর হয়। তারা হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন (ল্যান্সার)।

এছাড়া পলাতক থাকা আজিজ পাশা ২০০১ সালের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়েতে মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রুডোর বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ নিয়েও আলোচনা হয় বলে প্রেস সচিব ইহসানুল করীম জানান।

তিনি বলেন, দুই নেতাই জঙ্গিবাদ ইস্যুকে একটি ‘বৈশ্বিক সমস্যা’ হিসেবে অভিহিত করে তা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জঙ্গিবিরোধী অবস্থান এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের প্রশংসা করেন বলেও জানান তিনি।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ ও গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানির মতো বিষয়গুলো নিয়েও দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতার সঙ্গে তা গ্রহণ করেন।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ১২ বছর বয়সে তার বাবা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্র্র্রুডোর সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আগ্রহের কথা শেখ হাসিনাকে জানান জাস্টিন ট্রুডো।