আরও ১৬ বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি

একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী এবং রাজাকারদের হাতে নির্যাতিত আরও ১৬ জন নারীর নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2016, 12:28 PM
Updated : 8 Sept 2016, 12:28 PM

এদের নিয়ে মোট ১৪৬ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আগেই জানিয়েছেন, ৪০০ থেকে ৫০০ জন বীরাঙ্গনাদের তালিকা নিয়ে কাজ করছেন তারা, পর্যায়ক্রমে সবাইকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

সাতক্ষীরার দেবহাটার মৃত সতী সাবিত্রী চক্রবর্তী ও নিছতারা বিবি এবং চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মোছা. শুকুরন নেছা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন।

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মোছা. হাফিজা বেওয়া ও সমলা বেওয়া, ঠাকুরগাঁওয়ের রাণী শংকৈলের মৃত তিত্ত বালা, গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুরের মোছা. ছাপাতন বেওয়া, গোপালগঞ্জ সদরের রাশিদা বেগম এবং সিলেট শিবগঞ্জের রোকেয়া বেগমও এই স্বীকৃতি পেয়েছেন।

মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে ধরে রাখা একাত্তরে নারীদের ওপর চালানো সেই বর্বরতার ক্ষতচিহ্ন

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন বরিশালের আগৈলঝাড়ার কানন গোমেজ, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মিনারা বেগম, হবিগঞ্জের মাধবপুরের সন্ধ্যা ঘোষ, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মোসা. আফিয়া বেগম, নাটোর সদরের মোছা. শেফালী বেগম ও বিমলা রাণী সরকার এবং লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার আমিচা বেগম।

এরা প্রতি মাসে ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

১৯৭১ সালে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যা‌তিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানান। তার নির্দেশনায় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্য‌ন্ত চলছিল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামরিক শাসকদের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানি জান্তার সহযোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরইমধ্যে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাও আসে।

শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পর গতবছর ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে ওই প্রস্তাব পাস হয়।