গত বছর এ পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৬০ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪২ হাজার ৮৯৪ জন।
সেই হিসাবে এবার উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার বেড়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ পয়েন্ট। এছাড়া পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১৫ হাজার ৩৮২ জন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফলের অনুলিপি হস্তান্তর করেন। বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।
ফলাফল প্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা সেরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাশের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আরেকটু বেশি আনন্দিত যে আমাদের মেয়ে শিক্ষার্থী বেড়ে গেছে এবং তাদের পাসের হার বাড়ছে। তবে এখানে আমি মনে করি, ছেলে মেয়ে যেই হোক, সন্তান সন্তানই।”
যারা এবার কৃতকার্য হতে পারেনি, তাদের ‘আরেকটু মনোযোগী’ হতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। অভিভাবক ও শিক্ষকদের বলেন ‘আরেকটু যত্নবান’ হতে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি তার সরকারও শিক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে, কেননা দরিদ্রমুক্ত দেশগঠনের পরিকল্পনায় মূল হাতিয়ারই শিক্ষা।
এবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা, পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ায় অনুষ্ঠানে সন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ।
চলতি বছর ৩ এপ্রিল থেকে ১২ জুন এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা চলে। এরপর ১১ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত চলে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
আটটি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে ৮ হাজার ৩৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১২ লাখ ১৮ হাজার ৬২৮ জন শিক্ষার্থী এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে পাস করেছে ৮ লাখ ৯৯ হাজার ১৫০ জন।
এর মধ্যে আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭২ দশমিক ৪৭ শতাংশ, পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে ৪৮ হাজার ৯৫০ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডে পাস করেছে ৮৮ দশমিক ১৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী, তাদের মধ্যে ২ হাজার ৪১৪ জন পেয়েছে জিপিএ ৫।
আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবার ৮৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে; ৬ হাজার ৫৮৭ জন পূর্ণ জিপিএ পেয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, চলতি বছর্ উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হারের দিক দিয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে আছে। ছাত্রদের মধ্যে যেখানে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছাত্র; সেখানে ৭৫ দশমিক ৬০ শতাংশ ছাত্রী এবার পাস করেছে।
কেউ পাস করেনি এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবার ২৫টি। গত বছর ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী ফেল করেছিল।
এক নজরে ফলাফল ২০১৬
বোর্ড | পাশের হার (%) | জিপিএ-৫ (জন) |
ঢাকা | ৭৩.৫৩ | ২৮,১১০ |
রাজশাহী | ৭৫.৪০ | ৬,০৭৩ |
কুমিল্লা | ৬৪.৪৯ | ১,৯১২ |
যশোর | ৮৩.৪২ | ৪,৫৮৬ |
চট্টগ্রাম | ৬৪.৬০ | ২,২৫৩ |
বরিশাল | ৭০.১৩ | ৭৮৭ |
সিলেট | ৬৮.৫৯ | ১,৩৩০ |
দিনাজপুর | ৭০.৬৪ | ৩,৮৯৯ |
মাদ্রাসা বোর্ড | ৮৮.১৯ | ২,৪১৪ |
কারিগরি বোর্ড | ৮৪.৫৭ | ৬,৫৮৭ |
ডিআইবিএস (ঢাকা) | ৮১.৪৬ | ৩২৫ |
মোট | ৭৪.৭০ | ৫৮,২৭৬ |
ফল জানা যাবে মোবাইলে
বরাবরের মতোই যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানতে পারবেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
আলিমের ফল জানতে Alim লিখে স্পেস দিয়ে Mad স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৬ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল পাওয়া যাবে।
এছাড়া এইচএসসি ভোকেশনালের ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৬ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ই-মেইলে ফল জানিয়ে দেওয়া হবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষা
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ১৯ থেকে ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে।
ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য দেড়শ’ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে।
যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে যে সকল বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ৩০০ টাকা ফি কাটা হবে।
একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে ‘কমা’ দিয়ে লিখতে হবে।