তথ্য-প্রমাণেই হাসনাত আসামি: পুলিশ

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজাউল করিমকে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (গোয়েন্দা) যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2016, 07:06 AM
Updated : 14 August 2016, 10:30 AM

রোববার মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, “গুলশানের হামলার ঘটনায় হাসনাত করিমের জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তাই ওই ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।”

হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মামলায় প্রথম কোনো আসামি হিসেবে শনিবার হাসনাত করিমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আট দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

গত ১ জুলাই ওই জঙ্গি হামলার দুই দিন পর সন্ত্রাস দমন আইনে নিহতদের পাশাপাশি ‘অনেককে’ আসামি করে মামলাটি করেছিল পুলিশ।

হামলার পরদিন উদ্ধার পাওয়া যুক্তরাজ‌্যের নাগরিক হাসনাতকে নিয়ে পুলিশ সন্দেহের কথা জানালেও এক মাস পর গত ৪ অগাস্ট তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখায়।

তখন ডিএমপির উপকমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেছিলেন, হামলায় জড়িত থাকার ‘সন্দেহাতীত প্রমাণ’ পাওয়া গেলে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

তারপর তাকে হেফাজতে নিয়ে আট দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই ক‌্যাফেতে জঙ্গি হামলা চালিয়ে হত‌্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর কথা শনিবারই জানান পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

সেক্ষেত্রে হাসনাতকে আট দিন জিজ্ঞাসাবাদে গুলশান হামলায় তার জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কি না, সে বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা মুখ খোলেননি।

গুলশান হামলায় হাসনাতের এক সময়ের কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ‌্যালয়ের ছাত্র নিবরাজ ইসলামের জড়িত থাকার প্রমাণ এবং হামলার সময়ে ধারণ করা কিছু ভিডিওতে তার গতিবিধি গোয়েন্দাদের সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়।

গত ২ অগাস্ট হলি আর্টিজান বেকারিতে অভিযান শেষে উদ্ধার ১৩ জনসহ ৩২ জনকে নেওয়া হয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে। জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাই করে তাদের অনেককে ছেড়ে দেওয়া হলেও হাসনাত ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খানকে ফিরে না পাওয়ার কথা জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।

তার কয়েকদিন আগে পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছিলেন, গুলশানের ঘটনায় উদ্ধার পাওয়া হাসনাত করিম ‘সন্দেহমুক্ত নন’।

তবে হাসনাতের পরিবারের দাবি, মেয়ের জন্মদিন উদযাপনে ওই দিন সপরিবারে হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন হাসনাত।

প্রায় এক মাস পর গত ৪ অগাস্ট হাসনাত ও তাহমিদকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ, তারপর নেয় রিমান্ডে।

১ জুলাই রাতে গুলশানের ওই ক্যাফেতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত‌্যার পরপরই ফেইসবুকে নানাজন হাসনাতের সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা জানায়।

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে হাসনাতকে ২০১২ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল বলে গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে অনেকে লেখেন ফেইসবুকে।

বাংলাদেশে নজিরবিহীন এই হামলায় আইএস দায় স্বীকার করে পাঁচ হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করলেও পুলিশ দেশীয় জঙ্গি দল জেএমবিকে দায়ী করে আসছে।