হাসনাত এবার হলি আর্টিজান মামলায় গ্রেপ্তার

নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজাউল করিমকে এবার গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।

অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2016, 06:57 AM
Updated : 13 August 2016, 07:40 AM

হলি আর্টিজান বেকারি থেকে উদ্ধার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষককে সন্দেহের কথা জানালেও এক মাস পর তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছিল পুলিশ।

তারপর তাকে হেফাজতে নিয়ে আট দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর  ওই ক‌্যাফেতে জঙ্গি হামলা চালিয়ে হত‌্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর কথা শনিবার জানান পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাসনাত করিমকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।”

এই মামলায় এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার দেখাল পুলিশ। কেননা মনিরুল কয়েকদিন আগেই বলেছিলেন, হলি আর্টিজানের মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

যুক্তরাজ‌্যের নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশি হাসনাতকে গত ৪ অগাস্ট ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর ডিএমপির উপকমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেছিলেন, হামলায় জড়িত থাকার ‘সন্দেহাতীত প্রমাণ’ পাওয়া গেলে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

সেক্ষেত্রে হাসনাতকে আট দিন জিজ্ঞাসাবাদে গুলশান হামলায় তার জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কি না, সে বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা মুখ খোলেননি। 

গুলশান হামলায় হাসনাতের এক সময়ের কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ‌্যালয়ের ছাত্র নিবরাজ ইসলামের জড়িত থাকার প্রমাণ এবং হামলায় সময়ে ধারণ করা কিছু ভিডিওতে তার গতিবিধি গোয়েন্দাদের সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়।

হাসনাতের সঙ্গে উদ্ধার কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খানকেও ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন‌্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।

তবে তাকে গুলশান হত‌্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে না। পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, তাহমিদকে ৫৪ ধারায় মামলায়ই আরও সাত দিনের রিমান্ডে চাওয়া হবে।

গত ২ অগাস্ট হলি আর্টিজান বেকারিতে অভিযান শেষে উদ্ধার ১৩ জনসহ ৩২ জনকে নেওয়া হয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে। জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাই করে তাদের অনেককে ছেড়ে দেওয়া হলেও হাসনাত ও তাহমিদকে ফিরে না পাওয়ার কথা জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।

তার কয়েকদিন আগে পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছিলেন, গুলশানের ঘটনায় উদ্ধার পাওয়া হাসনাত করিম ‘সন্দেহমুক্ত নন’।

তবে হাসনাতের পরিবারের দাবি, মেয়ের জন্মদিন উদযাপনে ওই দিন সপরিবারে হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন হাসনাত।

প্রায় এক মাস পর গত ৪ অগাস্ট হাসনাত ও তাহমিদকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের  কথা জানায় পুলিশ। তারপর নেয় রিমান্ডে।

গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের ওই ক্যাফেতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত‌্যার পরপরই ফেইসবুকে নানাজন হাসনাতের সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা জানায়।

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে হাসনাতকে ২০১২ সালে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিল বলে গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে অনেকে লেখ্নে ফেইসবুকে।

বাংলাদেশে নজিরবিহীন এই হামলায় আইএস দায় স্বীকার করে পাঁচ হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করলেও পুলিশ দেশীয় জঙ্গি দল জেএমবিকে দায়ী করে আসছে।