মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি মিলল ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর

ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে অবশেষে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2016, 07:46 AM
Updated : 11 August 2016, 11:48 AM

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সুফি আব্দুল্লাহিল মারুফ বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৩৫তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে মুক্তিযোদ্ধার (বীরাঙ্গনা) স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এর আগে আরও ১২২ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ হয়েছিল জানিয়ে মারুফ বলেন, এ নিয়ে মোট ১২৩ জনকে সরকার স্বীকৃতি দিল।

তারা মুক্তিযোদ্ধাদের মত সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলেও জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান।

১৯৭১ সালে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানান। তার নির্দেশনায় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত চলছিল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামরিক শাসকদের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানি জান্তার সহযোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরইমধ্যে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা আসে।

শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। গতবছর ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে সেই প্রস্তাব পাস হয়।

গতবছর অক্টোবরে সরকার প্রথম দফায় ৪১ বীরাঙ্গনার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করলে তাতে নিজের নাম না দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, যিনি একাত্তরে নির্যাতিত নারীদের অধিকার আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিলেন।

সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছিলেন, “কারও কাছে কখনও কিছু চাইনি, শুধু স্বীকৃতি চেয়েছিলাম। আমার নামটা আসা উচিত ছিল। আমি দুঃখিত না, অভিযোগ করছি না… আমি ক্ষুব্ধ। অত্যন্ত মনোকষ্ট পেয়েছি।”