কাজে যোগ দেননি বাবুল আক্তার: ডিআইজি

স্ত্রী হত্যার ঘটনায় আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার দুই মাস পর কর্মস্থলে যাওয়ার খবর ছড়ালেও তিনি কাজে যোগ দেননি বলে ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2016, 02:43 PM
Updated : 3 August 2016, 03:17 PM

পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল বুধবার দুপুরে ঢাকায় তার কর্মস্থল পুলিশ সদর দপ্তরে যান বলে বিভিন্ন টেলিভিশনে খবর দেওয়া হয়।

বাবুল আক্তারের এক স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে অফিসের উদ্দেশে তিনি বের হন। শুনেছি তিনি কাজে যোগ দিয়েছেন।”

বাবুল পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়ে একজন ডিআইজির কক্ষে ঢুকেছিলেন বলেও গুঞ্জন চলে।

এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সদর দপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এ কে এম শহিদুর রহমান সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা নিশ্চিত যে বাবুল আক্তার কাজে যোগ দেননি।”

তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে এসেছিলেন কি না- জানতে চাইলে ‘জানা নেই’ বলে এড়িয়ে যান বাবুলের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।

বাবুলের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তাও সহকর্মী বাবুলের বিষয়ে মুখ খোলেননি।

বাবুলের খবর জানতে চাইলে সেই স্বজন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে “তিনি এখনও বাসায় ফেরেননি। বাসায় ফিরলে কথা বলার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে কাজে যোগ দিয়েছেন কি না।”

বাবুল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি হয়ে আসার কয়েক দিনের মধ্যে গত ৫ জুন সকালে বন্দর নগরীর ও আর নিজাম রোডে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু।

হত্যাকাণ্ডের ধরন দেখে জঙ্গিদের সন্দেহ করা হলেও কয়েকদিন পর আকস্মিকভাবে বাবুলকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।

স্ত্রী হত্যা মামলার বাদী বাবুল মিতু হত্যাকাণ্ডের পর দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় এসে তার শ্বশুরবাড়িতে ওঠেন। এখনও সেখানেই রয়েছেন তিনি।        

বাবুল আক্তার

নানা আলোচনার মধ্যেও বাবুল নিজে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলেছেন না, যোগ দিচ্ছেন না চাকরিতেও।

গত ২১ জুলাই পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “সে (বাবুল) চাকরিতে বহাল আছে, কিন্তু অফিস করছে না। অফিসে আসে না, আমাদের সাথে যোগাযোগও করে না। সে কেন আসে না, সে কথা আমরা বলতে পারব না।”

তবে স্ত্রী খুন হওয়ার পর বাবুল মানসিকভাবে বিপর্যন্ত রয়েছেন দাবি করে তার বাহিনীর প্রধান শহীদুল হক বলেন, “তার নাকি চাকরি করার মতো মানসিকতা নেই।”

২৪ জুন মধ্যরাতে ঢাকার বনশ্রীতে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুলকে তুলে আনে পুলিশ। প্রায় ১৪ ঘণ্টা গোয়েন্দা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর থেকে বাবুল আর অফিসে যাচ্ছেন না।

শুরুতে জঙ্গিদের সন্দেহ করা হলেও মিতু হত্যাকাণ্ডের জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, এটা ছিল দুর্বৃত্তদের হামলা।

মিতু হত্যা তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে আইজিপি ২১ জুলাই বলেছিলেন, “তদন্তের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। মেইন একিউজড মুছাকে পাওয়া গেলে পুরো বিষয়টা স্পষ্ট হবে।”

মিতু হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন দুজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন বলেও পুলিশ জানিয়েছে।