সন্ত্রাসে ভীত নই, আছি বাংলাদেশের পাশেই: আবে

গুলশানে জঙ্গি হামলায় সাত জাপানি নিহত হওয়ার পরও বাংলাদেশকে আগের মতোই সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন শিনজো আবে।

এস এম নাদিম মাহমুদ, জাপান থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2016, 05:05 PM
Updated : 2 August 2016, 05:53 PM

হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মাসপূর্তিতে মঙ্গলবার নিহত সাত জাপানির স্মরণে এক সভায় তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড তো আর বন্ধ থাকতে পারে না। এদের (সন্ত্রাসীদের) জবাব হবে আমাদের সচেতনতা আর কর্মকাণ্ডে।

“বাংলাদেশ আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। এখানে আঘাত লাগা মানে পুরো এশিয়ায় আঘাত লাগা। আমরা এই উগ্রবাদীদের দাপটে মোটেই ভীত নয়, বন্ধুত্বের হাত নিয়ে বাংলাদেশের পাশে সব সময় জাপান আছে, থাকবে।”

বাংলাদেশের উন্নয়নে একক দেশ হিসেবে বৃহত্তম অংশীদার জাপানের যে সাতজন জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন, তার ছয়জনেই ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্পে কাজ করছিলেন।

গত বছর বাংলাদেশে এক জাপানি নিহত হওয়ার পর গুলশানের ঘটনায় জাপানে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। আবে নিজেও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।

তারপর আবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শেখ হাসিনাও এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার সরকারের উপর আস্থা রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।     

স্মরণসভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি শিনজো আবে

জঙ্গি হামলার ঘটনাটিকে ‘ন্যক্কারজনক ও ঘৃণিত’ কাজ উল্লেখ করে আবে বলেন, “আমি কখনোই চাইনি এই ধরনের খবর শুনতে। আজ যখন আমাদের এই সাহসী মানুষদের আত্মত্যাগে ফুল দিয়ে স্মরণ করছি, তখন অনায়াসে তাদের মুখগুলো আমার সামনে ভেসে উঠছে। এটি অমানবিক ও কাপুরুষদের কাজ।”

স্মরণ সভায় নিহতদের পরিবারের সদস্য ছাড়াও জাপান সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিল।

গুলশান হামলায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া জাইকা কর্মী তামকি ওতানাবে স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন।

জাইকার কর্মীরা তাদের নিরাপত্তায় সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার প্রধান শিনিচি কিতাওয়াকা বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে কথা বলেছি, আমাদের নাগরিকদের শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়ার আশ্বাস এসেছে। জাপান সরকারও আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

বাংলাদেশের উন্নয়নে জাইকার সব ধরনের কর্মকাণ্ড আগের মতোই বলবৎ থাকবে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

“নিহতদের তো আমরা আর তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দিতে পারব না, তবে প্রতিটি নিহতদের পরিবারকে দেখভালের দায়িত্ব জাপান সরকার নেবে।”

স্মরণসভায় জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, জাপান সরকার প্রবাসে নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।

“আমরা বাংলাদেশে জাইকার কর্মীদের জন্য ব্রুলেট প্রুফ গাড়ির ব্যবস্থা করছি।”

বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের কথাও বলেন তিনি।