বানের জলে খাবার সঙ্কটে পড়া হাতিটি যাতে মানুষের কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সে দিকে এখন মূল দৃষ্টি রাখছেন পশু চিকিৎসকসহ ১৭ জনের সরকারি দলটি।
লোকালয়ে হাতির আক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তাও চাইছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
প্রতিনিধি দলটিতে থাকা পশু চিকিৎসক সৈয়দ হোসেন সোমবার রাত ১০টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেশ কিছুদিন পর বুনো হাতিটি এখন লোকালয়ের খুব কাছাকাছি রয়েছে।
সকাল ১১টার দিকে সরিষাবাড়ি উপজেলার কাছেই উত্তর চনুয়াপটল গ্রামের কাছে আসে হাতিটি। দিনভর ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যায় অবস্থান নেয় শিষেরবাড়ি এলাকায়।
“চারদিকে পানি। খাবার পাচ্ছে না দুর্বল হতে থাকা হাতিটি কোথাও। এ অবস্থায় লোকালয়ের দিকে ধাবিত হয় সে। কলাবাগান, বাঁশের ঝাড়ের খাবার খেয়েছে সে আজ । কিন্তু মানুষ তাকে বিরক্ত করাও শুরু করেছে।”
হাতি লোকালয়ে আসায় বড় ধরনের আক্রমণেরও ঝুঁকি বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
সৈয়দ হোসেন বলেন, “লোকালয়ের কাছাকাছি আসার পর থেকে লোকজন তাকে ঘিরে ফেলে দূর থেকে। এতে আশপাশে ঘুরঘুর করে হাতিটি। লোকালয়ে উঠে যাওয়ারও চেষ্টা করেছে। তবে স্থানীয় লোকজন আশপাশে আগুন জ্বালিয়ে রাখায় হাতিটি সামনে এগোয়নি।”
আক্রমণের শঙ্কা থাকলেও সে পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান এই পশু চিকিৎসক।
“আমাদের সঙ্গে হাতি অচেতন করার ট্রাঙ্কুলাইজার (অচেতনকারী বন্দুক), মাহুতসহ প্রাসঙ্গিক কারিগরি টিম রয়েছে। সুবিধাজনক সময়ে তাকে নিরাপদ জায়গায় নেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হবে।”
তিনি জানান, সন্ধ্যার সময় লোকজনের তাড়া খেয়ে এখন হাতিটি জেনাই নদীর আশপাশে রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
গত ২৬ জুন এই বুনো হাতিটি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার আন্তর্জাতিক মেইন পিলার নম্বর ১০৫২-এর কাছ দিয়ে বানের জলে ভেসে বাংলাদেশে আসে।
এরপর কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ হয়ে জামালপুরে ফিরে এখন সেখানে রয়েছে হাতিটি।
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক অসিত রঞ্জন পাল জানান, আসামের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ৩ অগাস্ট বাংলাদেশে আসবে বলে নিশ্চিত করেছে।