অধিকাংশের গুলি লেগেছে ‘পেছন থেকে’

ঢাকার কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশের শরীরে পেছন থেকে গুলি লেগেছে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2016, 09:40 AM
Updated : 27 July 2016, 07:51 PM

ময়নাতদন্তকারী দলের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিহতদের প্রত্যেকের শরীরে ৬-৭টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও মাথায় আঘাতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।”

“নয় জনের মধ্যে অধিকাংশের শরীরে বুলেট ঢুকেছে পেছন দিক দিয়ে। শরীরের অন্যান্য অংশেও গুলি লেগেছে,” বলেন তিনি।

বুধবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নয়জনের লাশের ময়নাতদন্ত করেন চিকিৎসকরা। সোহেল মাহমুদের সঙ্গে ছিলেন ফরেসনিক বিভাগের প্রভাষক প্রদীপ বিশ্বাস ও সোহেল কবির।

সোহেল মাহমুদ জানান, নিহতদের চারজনের শরীরের ভেতরে সাতটি গুলি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজনের শরীরে তিনটি, আরেকজনের শরীরে দুটি এবং বাকি দুজনের শরীরে একটি করে বুলেট ছিল। বাকিদের শরীরে বুলেটের ক্ষত থাকলেও তা বেরিয়ে গেছে।”

সোমবার রাতে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কে তাজ মঞ্জিল নামের ছয় তলা একটি ভবনের পঞ্চম তলায় অভিযানে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। পরে মঙ্গলবার ভোরে সেখানে সোয়াটের বিশেষ অভিযানে নিহত হন সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জঙ্গিরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানোর চেষ্টা করেছিল। ওই বাসায় অস্ত্র, বিস্ফোরকও পাওয়া গেছে।   

নয়জনের মৃতদেহ মঙ্গলবার বিকালে মর্গে নেওয়া হয়। তারও অন্তত ১২ ঘণ্টা আগে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, নিহতরা কোনো ধরনের নেশায় আসক্ত ছিল কি না তা জানতে চেয়েছে পুলিশ।

“সে অনুযায়ী ডোপ টেস্টের জন্য মৃতদেহের চুল, রক্ত ও ইউরিন সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হয়েছে থাই মাসল। এছাড়া ভিসেরা পরীক্ষার জন্যও প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।”

এর আগে গুলশানে জঙ্গি হামলার পর কমান্ডো অভিযানে নিহত হামলাকারীদের ক্ষেত্রেও ডোপ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

আইএস জঙ্গিদের মত বাংলাদেশের জঙ্গিরাও ক্যাপ্টাগন নামের বিশেষ ধরনের মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন কি না, তা জানতেই এ পরীক্ষা।

গুলশানের হামলার পর আইএস তার দায় স্বীকার করে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করেছিল। আর মঙ্গলবার কল্যাণপুরের ওই বাসায় অভিযানের পর সেখানেও আইএস এর পতাকা পাওয়া যায়। 

অবশ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেছেন, নিহতরা সবাই বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি দল জেএমবির সদস্য এবং গুলশানের হামলাকারীরাও ‘একই গ্রুপের’ বলে তাদের ধারণা।