গুলশান ও কল্যাণপুরে নিহত জঙ্গিরা এক গ্রুপের: ডিএমপি কমিশনার

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কল্যাণপুরের আস্তানায় ও গুলশানে সেনা অভিযানে নিহত হামলাকারীরা একই জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2016, 11:17 AM
Updated : 26 July 2016, 01:58 PM

কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের ৫৩/৩ নম্বর বাড়িতে রাতভর চলা অভিযানে নয় জঙ্গির নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।

“এখন পর্যন্ত প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ যা আমরা পেয়েছি, তাতে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে- গুলশান হামলায় যারা অংশগ্রহণ করেছিল, এরাও একই গ্রুপের সদস্য। গুলশানে জঙ্গিদের যেরকম ব্যাকপ্যাক পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো এখানেও পাওয়া গেছে।

“গুলশান হামলার মতো বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনায় কল্যাণপুরে আস্তানা গড়েছিল জঙ্গিরা। তারা গুলশান হামলায় জড়িত জঙ্গিগোষ্ঠী দলেরই সদস্য।”

হামলার ধরণ, হামলাকারীদের বয়স ও বেশভূষাসহ দুটি ঘটনার মধ্যে তুলনা করে ‘মোটামুটি মিল’ পাওয়া গেছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।

সোমবার মধ্যরাতের পর কল্যাণপুর গার্লস হাই স্কুলের পাশের ‘জাহাজ বিল্ডিং’ হিসেবে পরিচিত ‘তাজ মঞ্জিল’ নামের ওই ৬ তলা ভবন ঘেরাও করে অভিযান শুরু হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিকে বোমা ও গুলি ছোড়া হয়, তারাও পাল্টা গুলি ছুড়ে।

সকাল ৭টার আগে সোয়াট বাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত ‘অপারেশন স্টর্ম-২৬’ নামে এক ঘণ্টার ওই অভিযান শেষে ভবনটিতে নয় জনের লাশ পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। গুলিবিদ্ধ একজনকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ।

অভিযান শুরুর পরে প্রথমে মাইকে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছিল জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তাদের কথাবার্তা শোনে এবং চেহারা ও বেশভূষা দেখে উচ্চ শিক্ষিত বলে মনে হয়েছে।

“নিহতদের বয়স ২০ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে; পরণে ছিল কালো পাঞ্জাবি ও জিন্স প্যান্ট। একজন ব্যতীত সবার পায়ে ছিল কেড্স। তাছাড়া তাদের ওখানে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। সেগুলো আসল কি না যাচাই করে দেখা হচ্ছে।”

নিহতরা গত ২০ জুন কল্যাণপুরের ওই ভবনের পঞ্চম তলা ভাড়া নিয়েছিলেন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “তাদের ব্যাপারে কোনো তথ্যাদি না রাখায় বাড়িওয়ালাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

১ জুলাই গুলশানের কূটনৈতিক এলাকায় হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় অংশ নিয়েছিল ৬ জন জঙ্গি। সেনাবাহিনী পরিচালিত কমান্ডো অভিযানে নিহত হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এদের একজন নিবরাজ ইসলাম নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও মীর সামিহ মোবাশ্বের স্কলাস্টিকার ছাত্র ছিলেন।

ওই অভিযানে হামলাকারী সবাই নিহত হয়েছিল, যাদের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ থেকে পাঁচজনের নাম দেওয়া হয়েছিল- আকাশ, বিকাশ, ডন, বাঁধন ও রিপন।

তবে এখনও পর্যন্ত এই অভিযানে নিহতদের নাম ঘোষণা করা করা হয়নি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “এখনো পর্যন্ত এই নয় জনের নাম, ঠিকানা পরিচয় আমরা জানতে পারিনি। জানার জন্য আমাদের তদন্ত চলছে।

“তাদের ফটোগ্রাফ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোকে ফেইসবুকের মাধ্যমে প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক ও সোস্যাল মিডিয়াতে প্রচার করা হবে।”