বুধবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের পক্ষে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এ তথ্য জানান।
গত বছরের ১২ অক্টোবর ৪১ জন বীরাঙ্গনার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। পরে গত মার্চ মাসে আরও ২৬ বীরাঙ্গনার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ হয়।
সংসদে মন্ত্রী বলেন, “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক যে সকল নারীরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, যারা নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন সে সকল বীরাঙ্গনাদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের সম্মানি ভাতা প্রদানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানান।
তার নির্দেশনায় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত চলছিল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামরিক শাসকদের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানি জান্তার সহযোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।এরইমধ্যে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাও আসে।
শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পর গতবছর ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে এ নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়।
জয়পুরহাটের সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদুর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর পক্ষে নৌমন্ত্রী আরও বলেন, “বর্তমানে বীরাঙ্গনাদের পূর্ণাঙ্গ কোনো তালিকা এ মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত নেই। তবে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে বীরাঙ্গনাদের একটি তালিকা সংরক্ষিত আছে।”
সিলেটের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, হুইল চেয়ারধারী যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভিত্তিতে এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা উত্তোলনের সময় ন্যূনতম দুই মাস করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।
এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সারা দেশে আলাদা কবরস্থান করা হবে। এছাড়া ইতোমধ্যে মৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সবার কবরের জন্য একই রকম ফলক করা হবে। প্রতিটি ফলকের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হবে।