গত ২ জুলাই অভিযানের পর উদ্ধার অন্যদের সঙ্গে হাসনাতকেও ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা পুলিশ জানালেও হাসনাতসহ দুজনের সন্ধান মিলছে না বলে তাদের পরিবারের দাবি।
হাসনাতের বাবা এম আর করিম সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে ছেলের সন্ধান চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক ও মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।”
হাসনাত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। গুলশানের ওই ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যায় জড়িত এক যুবকও বেসরকারি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
ওই হামলার বিষয়ে হাসনাতকে সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তার সঙ্গে উদ্ধার তাহমিদ হাসিব খানকেও সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু হাসনাত ও তাহমিদকে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানালেও দুজনের বিষয়ে সন্দেহমুক্তি হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো বক্তব্য পুলিশ দেয়নি। এই ঘটনার মামলায়ও তাদের আসামি করা হয়নি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান শনিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যাদের উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের প্রত্যেককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ এখন পুলিশের কাছে নেই।”
কিন্তু দুজনের পরিবারই জানায়, হাসনাত ও তাহমিদ বাড়ি ফেরেনি।
এম আর করিম বলেন, “গতকাল (রোববার)পুলিশের মহাপরিদর্শক ও মহানগর পুলিশের কমিশনারের কাছে ছেলের হার্টের সমস্যা রয়েছে জানিয়ে তাকে দরকারি ওষুধ দেওয়ার অনুমতি চেয়েছিলাম।
“বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুলিশের বরাত দিয়ে জানতে পারি হাসনাত পুলিশের হেফাজতে নাই। তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে তার সন্ধান চেয়ে আবেদন করেছি।”
পুলিশ অস্বীকার করলেও এই দুজনের পরিবারের সন্দেহ, তাদের সন্তানরা ডিবির কাছেই রয়েছে।
তাহমিদের বাবা আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান ওরফে শাহরিয়ার খান শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তার ছেলে ডিবির কাছে আছে বলে তার বিশ্বাস।
সোমবার শাহরিয়ারের ফোন নম্বরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে কল করা হলে তার ভাগ্নি পরিচয় দিয়ে ফারাহ নামে একজন তা ধরেন।
“মামা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খুব দুঃচিন্তায় আছি। তাকে আজকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে,” বলে আর কিছু বলতে চাননি তিনি।
হলি আর্টিজান বেকারিতে জিম্মি দশার একটি ভিডিওচিত্র প্রকাশের পর নর্থ-সাউথের সাবেক শিক্ষক হাসনাতকে নিয়ে সন্দেহের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছিল।
নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরিরের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে হাসনাতকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল বলে গণমাধ্যমের খবর। তিনি বেশ কিছু দিন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।
পরিবারের দাবি, মেয়ের জন্মদিনে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গুলশানের ওই অভিজাত খাবার দোকানে গিয়েছিলেন হাসানাত।
কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ গুলশান হামলার আগের দিন দেশে ফেরেন।