ঢাকার গুলশানের ক্যাফে ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশ সফররত দেশটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান ব্যক্তি বিসওয়ালের সঙ্গে সোমবার বিকালে নিজ মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তিনি আমাদের দৃঢ় প্রত্যয় দিয়ে গিয়েছেন যে, বাংলাদেশের এই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় তার দেশ আমাদের পাশে থাকবে।
“পসিবল সব ধরনের হেল্প তারা আমাদের করবেন, টু ফাইট অ্যাগেইনস্ট টেররিজম ইউনাইটেডলি। কী ধরনের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন- তা আমরা অ্যাসেস করব। তারপর তাদের জানাব। যেভাবে আমরা চাইব, সেভাবে তারা সহযোগিতা করবেন।”
গত ১ জুলাই গুলশানের কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত হোলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ নিহত হয়। নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকও ছিলেন একজন।
বাংলাদেশে নজিরবিহীন ওই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা করার প্রস্তাব দেওয়ার প্রেক্ষাপটে রোববার দুই দিনের সফরে ঢাকা আসেন নিশা দেশাই বিসওয়াল।
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুলের হকের সঙ্গে বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রস্তাব দেন তিনি।
রোববার বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকের সঙ্গেও তার বৈঠক হয় তার।
সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যদের সহযোগিতা নিতে সম্মত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের উদারতার প্রশংসা করেন নিশা বিসওয়াল।
জঙ্গিবাদের মতো ‘বড় হুমকি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত- এই বার্তা দিতেই সফরে এসেছেন বলে মন্তব্য করেন নিশা বিসওয়াল।
তিনি বলেন, “আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ, আমরা দৃঢ় যে সন্ত্রাস জয়ী হবে না। যারা আমাদের সমাজে সন্ত্রাস ঢুকানোর চেষ্টা করবে তাদের পরাজিত করতে আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম ও তথ্য থাকবে… আমাদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা থাকবে।”
তরুণরা ‘সঠিক পথ খুঁছে নিচ্ছে’ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও তরুণদের সঙ্গে যুক্ত হতে কাজ করা হবে বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক এই সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে মে মাসে সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান খুন হওয়ার পরও ঢাকা এসে শ্রিংলার সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
সোমবার সকালে পুলিশ পাহারায় বিদেশিদের কাছে জনপ্রিয় গুলশানের ওই রেস্তোরাঁ পরিদর্শন করেন বিসওয়াল; বিকালে তিনি যান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
গুলশানের ওই ঘটনার পর বাংলাদেশে সমন্বিত কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতালি ও জাপান।
গুলশান হামলা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের দায় স্বীকারের খবর এলেও শোলাকিয়া নিয়ে আসেনি। পুলিশ বলছে, আইএস নয়- দুই ঘটনায়ই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি জড়িত।
সাংবাদিকদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আলাপকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশপ্রধান এ কে এম শহীদুল হক, র্যারপ্রধান বেনজির আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্টের প্রধান মনিরুল ইসলাম।