ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২২ বছর বয়সী এই তরুণকে ক্যাজুয়ালটি থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তার মা মাসুদা বেগম শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাবা (শাওন) খুব অসুস্থ্। আজ সকালে নাকে-মুখে রক্ত বের হচ্ছিল, কাঁপুনি দিচ্ছিল।”
মাসুদা জানান, শাওনের হাতে এখন হাতকড়া না থাকলেও আইসিইউর বাহিরে সারাক্ষণ পুলিশ প্রহরা রয়েছে। ছেলে বাঁচবে কি-না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এই মা।
“আমি পিঠা বানায়ে বিক্রি করি। শাওন আমারে মাসে চার হাজার টাকা দিত। ওর ছোট তিনজন ভাই আছে। ওদের বাবা আব্দুস সাত্তার আগে রিকশা চালাইত, এখন অক্ষম।”
পরিবারের ভাষ্য, শাওন প্রায় একবছর ধরে হলি আর্টিজান বেকারিতে বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি কোনো অপরাধে জড়িত নন।
একদল অস্ত্রধারী তরুণ গত ১ জুলাই ওই ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি ২০ জনকে হত্যা করে। পরদিন কমান্ডো অভিযানে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র বাহিনী। সে সময় ছয় সন্দেহভাজন অস্ত্রধারী নিহত হয়।
ওই অভিযানের আগেই ঘটনাস্থলের কাছ থেকে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় শাওনকে আটক করে। সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে পুলিশ পাহারায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
এদিকে শাওনের কোনো খোঁজ-খবর না পেয়ে ৩ জুলাই বিকালে হলি আর্টিজান বেকারির সামনের সড়কে আসেন তার মা। মোবাইলে ছেলের পাসপোর্ট সাইজের একটি ছবিও তিনি সাংবাদিকদের দেখান।
পুলিশ শাওনের বিষয়ে কী করছে জানতে চাইলে মাসুদা বেগম শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ বলছে, শাওনের মালিক খুব ভালো, তাই আমরা বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেছি।”
মাসুদা জানান, গুলশানের ওই ক্যাফের অন্য কর্মীরাও হাসপাতালে এসেছেন শাওনকে দেখতে। ক্যাফের মালিক তার লোক পাঠিয়ে বিভিন্ন খরচ দিয়েছেন। তবে শাওনের অনেক পরীক্ষা করানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন তার মা।
শুক্রবার দুপুরে শাওনের অবস্থার অবনতি হলে তার মৃত্যু হয়েছে ধরে নিয়ে হাসপাতালে কান্নাকাটি শুরু করেন তার মা-বাবা।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. বাচ্চু মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শাওনকে চারতলার পনের নম্বর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।”